Post Page After Menubar Ad

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন



প্রিয় পাঠক, আমার ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপনারা অনেকেই ড্রাগন ফল সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাচ্ছেন। এবার আপনারা সঠিক জায়গায় এসেছেন। ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ ও খাওয়ার নিয়ম এবং উপকারিতা সম্পর্কে আমার এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে। আশা করি মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়লে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আমাদের দেশে এখন নিয়মিত অনেক জেলাতে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলাতে এখন ড্রাগন ফল বিক্রি করা হয়। ড্রাগন ফল সাধারণত দুই রকমের হয়ে থাকে। একটার ভিতরের অংশ লাল এবং আর একটার ভিতরের অংশ সাদা। এটা দেখতে খুব চমৎকার এবং এর পুষ্টিগুণের দিক থেকেও বেশ উপকারী একটি ফল।

ভূমিকা

ড্রাগন ফলে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এই ফলে ক্যালোরি কম থাকার জন্য দি আপনি নিয়মিত খান তাহলে আপনার ওজন বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ফ্যাটি এসিড, বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটাতে আরো আছে আয়রন ও ফাইবার যা আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে, এই ফল খাওয়ার নিয়ম, এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে। আশা করি আপনারা মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়লে এ সম্পর্কে আপনারা একটা ধারণা পাবেন।

ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ

ড্রাগন ফল বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতার জন্য। এটি খেতে খুব সুস্বাদু এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য মানুষের মনে স্থান পেয়েছে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে এই ফল সুপরিচিত। বিভিন্ন নাম থাকলে স্বাদ এর  জন্য ভরপুর এই ড্রাগন ফল। এটা সাধারণত বিদেশি ফল হলেও আমাদের দেশে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়। এবার দেখা যাক ড্রাগন ফলে কি পুষ্টি উপাদান আছে।

প্রতি ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলের পুষ্টি উপাদান

* আয়রন আছে ০.৪-০.৭ মিলিগ্রাম

* ফসফরাস ১৫-৩৭ গ্রাম

* শর্করা ৮-৯ গ্রাম

* প্রোটিন আছে ০.১৫-০.৫ গ্রাম

* ভিটামিন বি ৩ -০.৩-০.৫ মিলিগ্রাম

* খাদ্যশক্তি -৩৪ - ৫১ কিলো ক্যালরি

* ফ্যাট ০.১১-০.৫ মিলিগ্রাম

* ক্যালসিয়াম -৭ -৯ মিলিগ্রাম

* আশ ০.৩৪-০.৮৯ গ্রাম

* ভিটামিন এ --সামান্য পরিমাণে

* ক্যারোটিন সামান্য পরিমাণ

* থায়ামিন সামান্য পরিমাণ

সুস্বাস্থ্যকর এই ফলটি আপনারা খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন।

ড্রাগন ফল খাওয়ার নিয়ম

ড্রাগন ফল খাওয়ার ধরা বাধা কোন নিয়ম নেই। এই ফল যে কোন ভাবেই খাওয়া যায় ‌ অন্যান্য ফলের মত এটাকে আপনি কেটে খেতে পারেন। এই ফলটিকে কেটে উপরের যে খোসা থাকে সেই খোসা ফেলে দিয়ে এটাকে খেতে পারেন। এই ফলের উপরের খোসা ফেলে দিয়ে আপনি জুস করেও খেতে পারেন। এই ফল আপনি খালি পেটেও খেতে পারেন এবং খাওয়ার পরেও খেতে পারেন এতে কোন সমস্যা নেই। তবে যেকোনো খাওয়ার শেষে এটা খেলে আপনার ভালো উপকারে আসবে। আর যদি রাতে খাবারের পর এটা খান তবে আপনার ঘুমের জন্য বেশ উপকারই একটা ফল ড্রাগন।

ড্রাগন ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতা

ড্রাগন ফল বিদেশি ফল হলে আমাদের দেশে খুব দূরত্ব পরিস্থিতি লাভ করেছে। আসলে একটি এক ধরনের ক্যাকটাস জাতীয় ফল। এই ফলে ভিটামিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজে ভরপুর। এই ফল আমাদের শরীরে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। সুস্বাদু এই ফল আমাদের দেশে বর্তমানে এর চাহিদা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এবার জেনে নেওয়া যাক এই ড্রাগন ফলের উপকারিতা।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়

ড্রাগন ফল টি সাধারণত এন্টিঅক্সিডেন্ট ফেনোলিক এসিড ও বিটা সায়ামিন সমৃদ্ধ। যা আমাদের শরীরে ফ্রি রেডিকেল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। ফ্রি রেডিকেল হল এমন এক পদার্থ যা ক্যান্সার ও অকাল বার্ধক্য সৃষ্টি করে। নিয়মিত এই ফল খেলে আপনার শরীরের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

হজমের সহায়তা করে

আমাদের শরীরের জন্য ড্রাগন ফল হজম করার জন্য ভালো একটি উপাদান। এটি নিয়মিত খেলে আপনার শরীরের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, এর জন্য শরীরের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ড্রাগন একটি ফাইবার সমৃদ্ধ ফল যা আপনার পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।

হার্টের জন্য ভালো

ড্রাগন ফলে সাধারণত এর ভিতরে ছোট ছোট কালো বীজ থাকে, যা অমেগা ৩ ওমেগা ৯ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ। যা এগুলো আপনার হার্টের জন্য খুব উপকারী এবং কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। এজন্য আপনি নিয়মিত এই ফল খেলে আপনার হার্টের জন্য খুব উপকারী। এটা আপনার হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

হাড় ভালো রাখে

প্রায় ১৭ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম থাকে ড্রাগন ফলে যা আপনার হারকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এবং হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই ফল আপনি নিয়মিত খেলে আপনার জয়েন্টের ব্যথা, ফ্যাকচার কিংবা হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।

গর্ভবতী মায়েদের জন্য

এই ফলে আছে ভিটামিন বি ,ফোলেট ও আয়রন। এজন্য এটা গর্ভবতী মায়েদের জন্য খুব আদর্শ একটি ফল। ফোলেট ও ভিটামিন বি সাধারণত জন্মগত ত্রুটি রোধ করতে সাহায্য করে ও গর্ভাবস্থায় শরীরের শক্তি সরবরাহ করে থাকে। এই ফলে থাকা ক্যালসিয়াম গর্বের বাচ্চার হাড়ের বিকাশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

ডায়াবেটিসের ঝুকি কুমার

নিয়মিত এই ড্রাগন ফল খেলে ওনাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে ‌ এই ফলটিতে আছে পর্যাপ্ত ফাইবার যা আপনার শরীরের রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত এই ফলটি খান তাহলে ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকা যায়। যাদের টাইপ টু ডায়াবেটিস আছে তারা নিয়মিত এই ফলটি খাবেন আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

গর্ভাবস্থায় ড্রাগন ফলের উপকারিতা

অনেক গর্ভবতী মা-বোনেরা আছেন যারা এই ফল খাওয়া উপকারিতা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। পুষ্টিগুনে ভরপুর এই ফলটি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি ও পটাশিয়াম আছে যা মা-বোনেদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে এই ড্রাগন ফল।

গর্ভাবস্থায় অনেক মা-বোনেরা কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যায় ভুগে থাকে। ‌ এ অবস্থায় নিয়মিত যদি আপনারা এই ড্রাগন ফল সেবন করেন তাহলে আপনাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। যেহেতু এটা ফাইবার সমৃদ্ধ ফল তাই এটা খেলে আপনাদের হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয় যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।

প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আছে ড্রাগন ফলে যা একজন গর্ভবতী মহিলার জন্য খুব উপকারী। এই ফলে ফ্যাট আছে সামান্য পরিমাণে গর্ব অবস্থায় আপনার পেটের বাচ্চা মস্তিষ্ক বৃদ্ধিতে ফ্যাটের প্রয়োজন পরে তাই এটি নিয়মিত খেলে ওনার বাচ্চার মস্তিষ্ক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আপনারা অনেকেই আবার ভাববেন এটাতে তো ফ্যাট আছে তাহলে এটা খেলে হয়তো আমরা মোটা হয়ে যাব কিন্তু না এটাতে ফ্যাটের পরিমাণ খুব সামান্য তাই অবস্থা এই ফলটি খেলে আপনার কোন সমস্যা নেই।

ড্রাগন ফল কত টাকা কেজি

সুস্বাদু একটি ফল ড্রাগন। এটি চাষ করা কিন্তু ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। এটি আবার আমাদের দেশে সব জায়গায় চাষ করা সম্ভব নয়। সারা পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে যেসব দেশে ড্রাগন ফল চাষ করা হয়ে থাকে সেগুলো হলো- ভারত, আমেরিকা ,ইসরাইল, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ইতালি ,আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ও থাইল্যান্ডে। আমাদের এই বাংলাদেশেও প্রায় অনেক জেলাতেই ড্রাগন ফল চাষ হয়ে থাকে। বাংলাদেশে এই ফলটির দাম প্রায় ২০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা কেজি ।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আজকে ড্রাগন ফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ, খাওয়ার নিয়ম এর উপকারিতা এসব বিষয়ে আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং একটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। অন্যরাও যেন জানতে পারে এর জন্য আপনারা এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। আরো নিত্য নতুন অনেক আর্টিকেল পড়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url