গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণগুলো জেনে রাখুন
প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম, আপনারা কেমন আছেন, আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণ গুলো কি এসব বিষয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা করব। অনেক মা-বোনেরা আছেন যারা এ সম্পর্কে জানেন কিন্তু যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আলোচনা। আশা করি মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেল কি পড়লে গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহের লক্ষণগুলো সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ধারণা পাবেন।
গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহে আপনি বুঝতে পারবেন সন্তান ধারণ করেছেন। তবে সেসব বিষয় বুঝতে আপনাকে অবশ্যই চোখ কান খোলা রাখতে হবে। প্রথম দিকে খুব একটা বেশি লক্ষণ বোঝা যাবে না। তবে আপনি যদি সচেতন থাকেন পিরিয়ড মিস না হলেও টের পেয়ে যাবেন আপনার জীবনে নতুন অতিথির আগমন ঘটছে।
ভূমিকা
আপনার শরীরের ভিতরে নতুন আরো একটি জীবন বেড়ে ওঠার সাথে সাথে আপনার শরীরের কিছু পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। নিয়মিত পিরিয়ড হয় এমন নারীদের পিরিয়ড যদি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ বলে ধরে নেওয়া হয়। এ সময় আপনার বমি বমি ভাব হবে, আপনার স্তনের আকার পরিবর্তন হতে থাকবে, এমনকি স্থানের আকার অনেকটা বড় হতে থাকবে, এ সময় আপনার মেজাজ আগের চেয়ে পরিবর্তন হবে, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে, মাথা ঘোরাবে।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
বিয়ের পর সাধারণত নারীদের শারীরিক অনেক পরিবর্তন দেখা দেয়। এছাড়া নারীরা নতুন অবস্থায় কোন কিছু বুঝে উঠতে পারে না। এ সময় তাদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় পড়তে হয়। তাই প্রথম গর্ভবতী হলে তার সঠিক নিয়ম জানা মা ও শিশুর জন্য দুজনেরই ভালো। আপনি গর্ভবতী কিনা এটা জানার জন্য অনেক সময় আমরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে থাকি। আপনারা ডাক্তারের কাছে না যেও ঘরে বসেই গর্ভবতী কিনা সেটা পরীক্ষা করতে পারবেন।
সাধারণভাবে পিরিয়ড মিস হওয়াকে গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ বলে মনে করা হয়। তবে অনেক সময় তার আগেই গর্ভধারণের কয়েকটি লক্ষণ আপনার শরীরে ফুটে ওঠে। যদি কোন মাসে আপনার পিরিয়ড না হয় তখন আমরা তাকে গর্ভবতী প্রাথমিক লক্ষণ মনে করে থাকি। তবে পিরিয়ড মিস হওয়ায় একমাত্র লক্ষণ নয় গর্ভধারণের।
আবার অনেক মহিলারা আছেন যাদের নিয়মিত পিরিয়ড হয়েছে তা সত্ত্বেও দেখা যায় গর্ভধারণ করেছেন। পিরিয়ড ছাড়া আপনার শরীরের যে পরিবর্তন দেখে বুঝতে পারবেন আপনার গর্ভধারণ করছেন তা এবার জেনে নেওয়া যাক।
বমি বমি ভাব
মর্নিং সিকনেস গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি। আপনি যদি প্রথম গর্ভবতী হন তাহলে বমি বমি ভাবের সাথে মমি নাও হতে পারে আবার হতেও পারে। বমি বমি ভাব সাধারণত গর্ভাবস্থার এক মাস পরে হয় তবে অনেক মহিলারা পিরিয়ড মিস করার আগেও এমনটা অনুভব করতে পারেন।
স্তনের আকার পরিবর্তন
গর্ভাবস্থায় সাধারণত স্তন একটু বড় হয় ও ফুলে যায়। স্থানের এই পরিবর্তনটা সাধারণত আপনার যখন মাসিকের দিনগুলিতে আপনি যে রকম একটু বড় বড় দেখতে ঠিক সেরকম। স্তনের চারিপাশে ত্বক কালো হয়ে যায় এবং স্তনের শিরা গুলি গর্ভাবস্থায় আরো ভালোভাবে দেখতে পাওয়া যায়। এগুলি সাধারণত পিরিয়ড মিসের আগেও হতে পারে।
অধিক পরিমাণে খাওয়া
গর্ভাবস্থায় সময় আপনার খাবারের ইচ্ছা অনেকটা বেড়ে যায়। বিশেষ করে যে সকল খাবারে বেশি ক্যালরি ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার যেমন দুধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য। আবার দেখা যায় আপনি প্রেগনেন্সির আগে যেসব ফর্মগুলো পছন্দ করতেন এ সময়ে সেসব খাবার ভালো লাগতে নাও পারে।
মেজাজ পরিবর্তন হওয়া
আপনি যখন প্রথম গর্ভধারণ করবেন তখন আপনার মেজাজের কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। অনেক মহিলারা আছেন এ সময়ে তাদের মেজাজ খিটখিটে সমস্যায় ভোগেন। আবার অনেক মহিলারা আছেন এ সময়ে অনেক আনন্দ ও আবেগপূর্ণ হওয়ার কথা ও জানান। গর্ভাবস্থায় আমাদের শরীরের হরমোন গুলি মস্তিষ্কের বিভিন্ন রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে আপনাদের মেজাজের কিছু পরিবর্তন ঘটায়।
শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি
শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি গর্ভধারণের আরো একটি প্রাথমিক লক্ষণ বলে মনে করা হয়। এ সময়ে নানান কারণে আপনার শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। গর্ভধারণের প্রাথমিক পর্যায়ে পিরিয়ড বন্ধ না হলেও যদি আপনার শরীর ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই প্রেগনেন্সি টেস্ট করে দেখতে পারেন। আপনার শরীর ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনেক সময় গর্ভধারণের ইঙ্গিত দেয়।
মাথা ঘোরা
গর্ভকালীন সময়ে আপনার মাথা ঘোরা সাধারণ একটি লক্ষণ। গর্ভবতী হওয়ার প্রথমে শরীরে নানা রকম হরমোনের পরিবর্তনের কারণ হঠাৎ করে রেগে যাওয়া আবার আনন্দিত হওয়া আবার অতিরিক্ত এক্সাইটেড হয়ে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ হতে পারে। গর্ভবতী হওয়ার শুরুর থেকেই আপনার মাথা ব্যাথা হতে পারে। গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন ও হরমোনের স্তর বৃদ্ধির কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। অনেক সময় তীব্র মাথা ব্যথার কারণে না ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।
বারবার টয়লেটে যাওয়া
বারবার টয়লেটে যাওয়ার গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে ধরা হয়। অভ্য লেসন প্রক্রিয়ার পর গর্ভধারণ সম্পন্ন হলে দিনে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রসব অনুভূতি হয়। গর্ভবতী হওয়ার প্রথম প্রথম শরীরের রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । এ সময় কিডনি অধিক পরিমাণে তরল মিশ্রিত করতে শুরু করে যা আমাদের প্রসবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এজন্য আপনাকে বারবার টয়লেটে যেতে হয়। এটাও একটা গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ।
প্রেগনেন্সি টেস্ট
যদি আপনার কোন মাসের পিরিয়ড না হয় এবং যদি আপনি ও নিরাপদ মেলামেশা করে থাকেন বা সহবাস করে থাকেন তাহলে অবশ্যই যখন দেখবেন পিরিয়ড শুরু হয়নি তখনই আপনি প্রেগনেন্সি টেস্ট করে নিতে পারেন। পিরিয়ড শুরু হওয়ার তারিখটি যদি আপনার জানা না থাকে তাহলে যখন থেকে আপনিও নিরাপদ সহবাস করেছেন তখন থেকে কমপক্ষে ২১ দিন পরে টেস্ট করেও আপনি গর্ভধারণ করেছেন কিনা তা জেনে নিতে পারবেন।
আজকাল অনেক প্রেগনেন্সি টেস্ট করার কিট পাওয়া যায়। যা সাধারণত বিভিন্ন ওষুধের দোকান বা ফার্মেসিতে বিক্রি করা হয়। এসব প্রেগনেন্সি টেস্ট করার কিট কিনে এনে সকালে হিসাব এর মাধ্যমে এই প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
গর্ভধারণের প্রথম সপ্তাহ থেকে আপনার শারীরিক কিছু পরিবর্তন হতে পারে। এ সময় আপনার স্থানে ব্যাথা হতে পারে আবার স্তন ফুলে যেতে। এগুলো দেখে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই এগুলো সাধারণত গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন এবং এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হয়েছে। আর্টিকেলটি পরে আপনারা একটা লাইক দিবেন এবং অন্যরাও যেন জানতে পারে সেজন্য আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url