Post Page After Menubar Ad

কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন



প্রিয় পাঠক , আসসালামু আলাইকুম, আপনারা কেমন আছেন, আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। কলা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে যদি আপনাদের জানা না থাকে তবে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন ‌। আশা করি এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে কলা সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ধারণা পাবেন।
কলা একটা সহজলভ্য ফল যা বর্তমান সময়ে সবার কাছেই জনপ্রিয়। তবে এটি দামে সস্তা হলেও এর কিন্তু উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। এটা জানার জন্য অনেকেই ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য। তাই আজকে এ সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত জানাবার চেষ্টা করব।

ভূমিকা

কলা আমাদের দেশে একটি বারোমাসি ফল। কলা আমাদের দেশে প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। একটি কলা গাছে একটি মুচা থেকে প্রচুর কলা ধরে। আজকে আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা কলার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানব, কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানব,  খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানব, আশা করি আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

কলার পুষ্টি উপাদান

সাধারণত প্রত্যেকটি খাবারেই কোনো না কোনো উপাদান থাকে যা আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে কলাতে কি কি উপাদান আছে সেটা বের করেছেন। চলুন জেনে না যাক কলাতে কি কি পুষ্টি উপাদান থাকে।

শক্তি ১০০ ক্যালরি, ফাইবার ২.৬ গ্রাম ,ভিটামিন সি ১০.১১ মিলিগ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, ফসফরাস ২৬ মিলিগ্রাম ,ম্যাঙ্গানিজ ৩১ মিলিগ্রাম, কোলিন ১১ মিলিগ্রাম ,আলফা ক্যারোটিন ২৭.১ মিলিগ্রাম, বিটা ক্যারোটিন ২৯ মিলিগ্রাম। এছাড়াও কলাতে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন ও মিনারেল আছে যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ,ভিটামিন ই, ভিটামিন কে ,আয়রন, ক্যালসিয়াম ,ফসফরাস ,ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক ,পটাশিয়াম, সোডিয়াম, কপার ইত্যাদি।

কলার উপকারিতা

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ফল কলা যা খেতে খুব সুস্বাদু। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে সর্বপ্রথম কলা পাওয়া যেত কিন্তু কলার পুষ্টিগুণ এর উপর নির্ভর করে এখন সারা বিশ্বেই চাহিদা রয়েছে প্রচুর। আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিদিন কমবেশি কলা খেয়ে থাকি। কলার উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের জানা খুব প্রয়োজন। চলুন কলা খাওয়ার ফলে কি কি উপকারিতা হয় তা জেনে নেয়া যাক । 

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে

আমাদের শরীরে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে কলা খাওয়া খুব প্রয়োজন। কলাতে আছে ডায়েটারি ফাইবার যা আমাদের খাদ্যকে পচনে সহায়তা করে। এটাতে আরো আছে প্রি বায়োটিক উপাদান যা আমাদের পেটের মধ্যে অবস্থিত ভালো ব্যাকটেরিয়াকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কলাতে আরো পাওয়া যায় পেকটিন যা একপ্রকার ফাইবার। এই পেকটিন আমাদের শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।

হার্ট ভালো রাখে

একটি কলাতে প্রায় পটাশিয়াম পাওয়া যায় ৪০০ মিলিগ্রামের কাছাকাছি। যা আমাদের শরীরের প্রত্যেকদিনের পটাশিয়াম এর চাহিদার ১০ শতাংশ। এই পটাশিয়াম আমাদের শরীরের উচ্চ রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে। কলাতে আরো পাওয়া যায় এন টি অক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে ‌ তাই নিয়মিত কলা খেলে আমাদের হৃদপিণ্ড সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়।

হার ও দাঁতের সুস্থতায়

কলাতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এই ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের আরকে মজবুত করে এবং উন্নত করে ‌ শুধু তাই নয় দাঁতের জন্যও খুব উপকারী একটা উপাদান এই ক্যালসিয়াম। তাই প্রতিদিন আমরা কলা খাব আরো দাঁতের জন্য। তবে এ কথা মনে রাখতে হবে যে ভিটামিন ডি ছাড়া আমাদের শরীরের ক্যালসিয়াম কে শোষণ করতে পারে না। এই ভিটামিন ডি সূর্যালোকের উপস্থিতিতে আমাদের শরীর প্রস্তুত করে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে

নিয়মিত এটা খাওয়ার ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কারণ এতে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, এবং ভিটামিন ই যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগের সাথে লড়তে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ সিস্টেমকে উন্নত করতে সাহায্য করে।

কিডনির জন্য ভালো

পটাশিয়াম আমাদের কিডনির জন্য খুব প্রয়োজন। কলাতে মিনারেল হিসেবে প্রচুর পরিমাণে থাকে পটাশিয়াম। এই পটাশিয়াম আমাদের শরীরের রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার কে নিয়ন্ত্রণ করে। এজন্য আমাদের পিকনিকে সক্রিয় এবং ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে কোন ব্যক্তি যদি কিডনি সমস্যা থাকে তাহলে পটাশিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। এজন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কলা খেতে হবে ‌

চুল ও ত্বকের জন্য ভালো

কলা আমাদের ত্বক ও চুল ভালো রাখতে বড় ভূমিকা রাখে। কলাতে আছে চুল ত্বক ও আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের ত্বক ও চুলের পুষ্টি প্রদান করে থাকে। এটা খাওয়ার ফলে আমাদের মুখের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, মুখের কালো দাগ ও বলিরেখা দূর করতে সহায়তা করে।

এছাড়াও কলা আমাদের তারুণ্যকে ধরে রাখতে সাহায্য করে, কলা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী নারীদের অনেকটা দূর করতে সহায়তা করে। গর্ভবতী মায়েরা যদি নিয়মিত কলা খান তাহলে তার অনাগত সন্তানের জন্ম ত্রুটি হ্রাস পায়, গর্ভবতী মায়েদের পেটের বাচ্চার সুষ্ঠু বিকাশ ঘটে এবং হাড়ের বিকাশ ঘটে।

কলা খাওয়ার অপকারিতা

* যদি আপনি রাতের বেলা বেশি পরিমাণে কলা খান আপনার ঘুমের সমস্যা হতে পারে। কারণ কলা আমাদের শরীরে প্রচুর শক্তি বা এনার্জি দেয় যার ফলে আমাদের তাড়াতাড়ি ঘুম আসতে চায় না।

* যদি আপনার ঠাণ্ডা জনিত কোন রোগ থাকে তাহলে কলা না খাওয়াই ভালো কারণ যদি বেশি পরিমাণে কলা খেয়ে থাকে তাহলে ঠান্ডা লাগার প্রবণতা আরো বেড়ে যেতে পারে।

* আমাদের শরীরের জন্য ফাইবার একটি প্রয়োজনীয় উপদান যা আমরা কলা খাওয়ার মাধ্যমে পেয়ে থাকি। বেশি পরিমাণ কলা খেলে আপনাদের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।

* সুগার এবং কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বেশি থাকে কলাতে তাই এটা বেশি খেলে আপনাদের দাঁতের সমস্যা হতে পারে ‌ কারণ কার্বোহাইডেট ও সুগার দাঁতের জন্য ক্ষতিকর।

* আপনাদের অনেকেরই আছে বিভিন্ন ফল খেলে এলার্জি জনিত সমস্যা হয় এমনকি কলা খেলেও। তাই যাদের কলা খাওয়ার জন্য এলার্জি হতে পারে তাদের এটা না খাওয়াই ভালো।

কলা খাওয়ার নিয়ম

* পুষ্টিবিদদের মতে সকালে নাস্তার সাথে বা নাস্তার পরে কলা খাওয়া যেতে পারে। যারা সকালে শুধু খালি পেটে কলা খেতে পছন্দ করেন তাদের অবশ্যই এই অভ্যাসটি ত্যাগ করা উচিত। কলাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং গ্লুকোজ থাকে। সকালে নাস্তায় যদি শুধু কলা খান তাহলে আপনার রক্তের সহকরার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, তাই সকালে নাস্তাই শুধু কলা না খাওয়াই ভালো।

* কলা খাওয়ার সঠিক সময় সকালের নাস্তা খাওয়ার পরে। দুপুরে খাওয়ার পরে এবং আপনি রাতেও খাওয়ার পরে কলা খেতে পারেন। তবে খালি পেটে কলা না খাওয়াই ভালো এতে আপনার পেটের এসিডিটির সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে । সুতরাং আমরা অবশ্যই খালি পেটে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকব। তবে সকালে নাস্তার পরে কলা খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

লেখকের মন্তব্য

কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক এটা আমরা এই আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত জানতে পারলাম। কলা একটি পরিপূর্ণ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। কাঁচা কলা পাকা কলা দুই ধরনের কলা খায় আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। আমরা গলার উপকারিতা ও অপকারিতা এই আর্টিকেল থেকে বলার যত গুনাগুন রয়েছে তা সবকিছুই মোটামুটি জেনে গেছি। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা খুব উপকৃত হয়েছে। যদি আরো বিস্তারিত কিছু জানতে চান তাহলে এই পোস্টটির নিচে একটি কমেন্ট করে জানাবেন। এই আর্টিকেলটি আপনাদের বন্ধুদের মাঝে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।










এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url