Post Page After Menubar Ad

মেথি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন



প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম, আপনারা কেমন আছেন, আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আজকে আপনাদেরকে মেথির উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানাবো। যারা এ সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। আশা করি মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়লে মেথি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন।
সাধারণত মসলা হিসাবে রান্নার কাজে মেথি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। খাবারের স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে এটি ব্যবহার বেশ পুরনো। মেথি স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। ভিটামিন ও খনিজ পাওয়া যায় মেথির বীজে। নানা ধরনের রোগ নিরাময় করার জন্য মেথি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ভূমিকা

মেথি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী একটা খাদ্য বস্তু। শুধু শরীর নয় এটা আমাদের তকৌশুলের যত্নেও খুব কার্যকরী একটা উপাদান। রক্তের শর্করা ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে চুল পড়া রোধে এটা অনেকটা কাজ করে। মেথির কি কি পুষ্টি গুণ আছে, মেথির উপকারিতা, অপকারিতা এবং মেথি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকবে আজকের এই আর্টিকেলে ‌

মেথির পুষ্টিগুণ

বিশেষজ্ঞদের মতে ,মেথিতে আছে ফলিক এসিড, নিয়াসিন, রাইবোফ্লাভিন,থায়ামিন, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ ,বি ৬ ইত্যাদি। আর খনিজের মধ্যে আছে পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম, কপার, সেলেনিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম ,ম্যাঙ্গানিজ।

মেথির উপকারিতা

মেথি দানা দেখতে খুব ছোট কিন্তু এর উপকার অনেক বড়। এটা বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। রান্নায় ব্যবহার করলে রান্নার স্বাদ অনেক গুণ বেড়ে যায়। আর যদি সকালবেলা মেথি দিয়ে শুরু করলে আপনার দিনটা সতেজতায় ভরে থাকবে। এবার জেনে নেওয়া যাক মেথি আমাদের কি কি উপকারে আসে।

কোষ্ঠ কাঠিন্য

বর্তমান আমাদের লাইফস্টাইল বা জীবন যাপনের জন্য শরীরে বিভিন্ন রকমের সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে একটা হল কোষ্ঠ কাঠিন্যর সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে চাইলে আপনি প্রতিদিন সকালে মেথি খেতে পারেন। কারণ এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের হজম প্রক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে যদি এটা খাওয়া যায় তাহলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

আপনি যদি মেথি ভিজিয়ে রাখেন তাহলে এর পুষ্টিগণ অনেকটা নষ্ট হয়ে যায়। আপনারা রোদে শুকিয়ে রেখে দিবেন এতে মচমচে লাগবে, এভাবেও এটা খেতে পারেন। মেথির বীজ রক্তে এল ডি এল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং শরীরের এইচ ডি এল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

বুকের দুধ বৃদ্ধিতে

মেথিতে আছে ফাইটোইস্টোজেন যা মা-বোনদের বুকের দুধ উৎপাদন ক্ষমতাকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। মেথি মহিলাদের বুকের দুধ বহু গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে কারণ এটি একটি গ্যালাক্টাগোগ হিসাবে কাজ করে।

রোগ প্রতিরোধে

মেথির মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকায় অনেক চিকিৎসকরা চর্বি এবং পোলা কামানোর জন্য মেথি খাওয়ার পরামর্শ দেন। এটা খেলে আমাদের শরীরে আটকে থাকা শক্তি ভেঙে দেয় যার ফলে আমাদের শরীরের ফোলা অনেকটা কমে যায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধে

অনেক গবেষণায় দেখা গেছে মেথির মধ্যে থাকা কিছু ফাইবারের জন্য নির্দিষ্ট কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। মেথি আমাদের শরীরের সাপোলিন ও মুসিজ খাবারের বিষাক্ত পদার্থ কে শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়। এইভাবে আমাদের শরীরের কোলন ক্যান্সার হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে।

পুরুষের কাম শক্তি বৃদ্ধিতে

মেথির কিছু উপকারের মধ্যে রয়েছে হার্নিয়া, স্বপ্নদ দোষ ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা করা হয় মেথি দিয়ে। এছাড়াও মেথি যৌন উত্তেজক এবং টেস্টোস্টেরন স্তর বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে।

মেথির অপকারিতা

মেথি খেতে সুস্বাদু এবং আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। এটি অতিরিক্ত মোটেও খাওয়া উচিত নয়। এটা অতিরিক্ত খেলে আপনার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে নানা রকম সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

* মেথি একটি জরায়ু উদ্দীপক তাই এটা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এটি গর্ভাশয় সংকোচন হতে পারে যা প্রারম্ভি ক প্রসব বেদনার উপর প্রভাব তুলতে পারে।

* আপনি যদি বেশি পরিমাণ মেথি নিয়ে খান তাহলে গ্যাস, পেটের ব্যথা ও ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে।

* বেশি মেথি খেলে এলার্জির সমস্যা হতে পারে এর কিছু লক্ষণ হলো বাত, ফুসকুড়ি, শ্বাস এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

* যদি আপনি আপনার শরীরের কোন অসুখ থাকে সেই অসুখের জন্য যদি কোন ওষুধ খেয়ে থাকেন তাহলে অন্ততপক্ষে ওষুধ খাওয়ার দুই ঘন্টা আগে বা দুই ঘণ্টা পরে মেথি খাবেন।

* এটা আপনার রক্তের জমাট বাধা প্রতিরোধ করে। তাই আপনাদের রক্ত যাদের পাতলা তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটা খেতে হবে।

* মেথির স্বাদ একটু তিতা ধারণের তাই আপনাদের অনেক সময় বমি ভাব অথবা মাথা ঘোরার সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মেথি খাওয়ার নিয়ম

* হালকা গরম পানিতে এক চামচ মেথি ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রেখে খাওয়া যেতে পারে। এটার সাধ বৃদ্ধির জন্য এতে মধু লেবুর রস মিশাতে পারেন।

* একটা বাটিতে পানি নিয়ে তাতে দুই চামচ মেথি সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানিটা থেকে খেয়ে ফেলুন।

* মেথি আপনি গুড়ো করে পানি দিয়ে খেতে পারেন।

লেখক এর মন্তব্য

মেথিকে আমরা সাধারণত ভেষজ হিসাবেই চিনে থাকি। রান্নায় এটা পাঁচফোড়ন হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। আপনি যদি নিয়মিত মেতি খান তাহলে কঠিন রোগ ও ভালো হয়ে যায়। আশা করি মেথি সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন এবং আর্টিকেলটি পরে উপকৃত হয়েছেন। আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের মাঝে অবশ্যই শেয়ার করবেন যাতে আপনার বন্ধুরাও এই সম্পর্কে জানতে পারি। ধন্যবাদ সবাইকে।




এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url