চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জানুন

 প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম আপনারা কেমন আছেন আশা করি আপনারা খুব ভালো আছেন। চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে আজ বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা হয়তো অনেকেই এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন কিন্তু যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি ‌। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলটি মনোযোগ  সহকারে পড়লে চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

আপনি যদি চুল পড়া বন্ধ করতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে প্রতিদিন সুষম খাবার খেতে হবে।     
এছাড়াও আপনি স্বাভাবিকভাবে চুল শুকাতে পারেন। উচ্চো তাপে যেমন হেয়ার ড্রায়ারে চুল না        শুকানো।  খুব টাইট করে চুল না বাধা। প্রতিদিন চুল আঁচড়ানো এসব বিষয়ে আপনার খেয়াল রাখা উচিত

ভূমিকা 

চুল পড়ার সমস্যায় আমরা সাধারণত ছেলে মেয়ে উভয়েই ভূগে থাকি। তবে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের চুল একটু বেশি পড়ে। কারণ ছেলেরা বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য ঘরের বাহিরে যেতে হয়। এজন্য চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‌ তাদের চুলও বেশি পরে। আর মেয়েরা চুলের প্রতি যত্নশীল তাই তাদের খুব কম পরে। আপনারা যদি প্রতিদিন ১০০ টি চুল পড়ে তাহলে সেটিকে আমরা স্বাভাবিক হিসেবেই ধরে নেই। তবে এর বেশি যদি পড়ে। ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি আছে সেগুলো ব্যবহার করলে আপনি সহজেই এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে পারেন।

চুল পড়া বন্ধ করার উপায় 

ছেলেরা সাধারণত চুল পড়ার সমস্যায় বেশি ভোগে থাকেন। অনেক ছেলেদের চুল পড়তে পড়তে অনেক সময় মাথায় টাক করে যায়। বেশি পরিমাণে চুল পড়লে অনেক সময় এসব চিন্তায় আত্মবিশ্বাস কমে যায়। তবে চুলের সঠিক যত্ন নিলে এই সমস্যা কিছুটা এড়ানো সম্ভব। চুল সুস্থ রাখতে আপনার চুলের চাহিদা বোঝার পাশাপাশি চুলের যত্ন নেওয়া জরুরি। আপনার ঘুম যদি কম হয় এটা একটা চুল পড়ার কারণ হতে পারে। চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে নিচে কয়েকটি ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হল। 

তুলসী পাতার রস 

তুলসী পাতাতে এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা আমাদের চুলকে শক্তিশালী করতে বা চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে ‌ তুলসী পাতার রস আমাদের চুলের গোড়াকে শক্তিশালী করে । একটি চুলের গোড়ার রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে। মেহের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। তুলসী পাতার রস চুলকে লম্বা ও ঘন করতে সাহায্য করে। তুলসী পাতা ও ডিমের কুসুম একসাথে ব্লেন্ডারে নিয়ে ভালো করে পিষে নিন। এর সাথে একটু অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি আপনার চুলে মাখিয়ে কমপক্ষে ৫০ মিনিট রেখে দিন। একটি তোলে হালকা গরম পানি দিয়ে তারপর থেকে চুলে স্ট্রিম করুন। এরপর চুল ধুয়ে শুকিয়ে নিন। 

নিম পাতার ব্যবহার 

তুলে নিমপাতার ব্যবহার অনেকটা পুরনো পদ্ধতি। নিম পাতায় থাকে উচ্চমাত্রায় ফ্যাটি এসিড যা আমাদের মাথার ত্বকের জন্য খুব উপকারী। আপনার মাথার ত্বক যদি ভালো থাকে অবশ্যই আপনার চুল ভালো থাকবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা এই চুল পড়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য এই পদ্ধতিটা খুব উপকারী একটা উপাদান।

আপনার  নিয়মিত নিমপাতার রস ব্যবহার করেন তাহলে স্ক্যাল্প একে অতিরিক্ত তেল পড়া বন্ধ করে। এজন্য আপনার চুলের গোড়ার শক্ত হবে তাই আপনার চুল পড়াও বন্ধ হবে। সেই সাথে মাথার ত্বকের অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন ১২ থেকে ১৩ টি নিমপাতা নিন এবং সাথে পরিমাণ মতো নারিকেল তেল নিন। নিম পাতাগুলো বেটে রস করে নিন। 

নিম পাতার রস হয়ে গেলে এর সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে মাথায় মেখে নিন এবং অবস্থায় ৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর ধুয়ে ফেলুন। নিম পাতার রস আমাদের মাথার ত্বকে বা চুলে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসাবে কাজ করে। এছাড়া আপনি অলিভ অয়েল তেল মাখতে পারেন। আপনি নিয়মিত এগুলো ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং আপনি আপনার মাথার কাঙ্ক্ষিত চুল গুলো পেয়ে যাবেন।

মেথির ব্যবহার 

আপনি যদি চুল পড়া বন্ধ করতে চান তাহলে আরেকটি কার্যকরী উপাদান হলো মেথি। মেথি আমাদের চুলকে দ্রুত লম্বা করতে সাহায্য করে। যদি আপনি চান যে আমার চুল পড়া বন্ধ হোক এবং মাথায় নতুন চুল বেশি করে গজায় তাহলে আপনি মেথি ব্যবহার করতে পারেন। মেথিতে আছে পর্যাপ্ত প্রোটিন যা আমাদের মাথার ত্বকের রক্ত চলাচল দ্রুত বাড়াতে কাজ করে। এছাড়াও এতে ভিটামিন সি পটাশিয়াম এবং আয়রন থাকে। এসব উপাদান চুলের অকালপক্কতা রোধ করতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে সেই সাথে চুলকা করে মসৃণ ও ঘন।

সারারাত আপনি দুই চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা এই ভেজা মেথি বেটে তার সাথে দুই থেকে তিন ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন। লেবু ও মেসি মিশ্রিত দ্রবণটি মাথায় মেখে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর আপনার পছন্দমত শ্যাম্পু দিয়ে সেগুলো ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং চুলের গোড়া অনেকটা শক্ত হবে। আপনি সাপ্তাহে একদিন ব্যবহার করলেই এর উপকার পাবেন।

লেবুর রস ও আমলকি 

ভিটামিন সি আমাদের চুলের জন্য একটি উপকারী ফল। কারণ এটা আমাদের চুলের গোড়াকে খুব মজবুত করে। লেবু ও আমলকি ভিটামিন সি এর একটি উৎকৃষ্ট উপাদান। আমলকি আমাদের চুলের খুশকি থেকে মুক্তি পেতে অনেকটা সাহায্য করে। এক চামচ আমলকি পাউডারের সাথে কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন।

আমলকি ও লেবুর রস মিশিয়ে সেগুলো একটি ঘন পেস্ট তৈরি করতে থাকুন। তারপর সেই পেস্ট আপনার চুলে লাগিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার আপনার পছন্দমত শ্যাম্পু দিয়ে সেগুলো ধুয়ে নিন। আপনি নিয়মিত এভাবে ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়া খুব দ্রুত বন্ধ হবে। 

পেঁয়াজের রস 

পেঁয়াজের রসে থাকে এক ধরনের সালফার হিয়ার ফলিকেলসে যা আমাদের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়, এবং খুব সহজেই চুল পড়া বন্ধ করে দেয়। পেঁয়াজের গুন এখানেই শেষ নয়, পেঁয়াজের রসে আছে বিপুল পরিমাণ এন্টি ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ যা স্কাল্পে ঘর বেঁধে থাকা জীবানুদের মেরে ফেলতে সাহায্য করে। একটা পিয়াজ থেকে যেকোন ভাবে রস সংগ্রহ করে নিন। সেই রস আপনার চুলে সরাসরি মাখিয়ে রাখুন। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর আপনার শ্যাম্পু করে নিন। আপনি যদি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করেন তাহলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে। 

অ্যালোভেরা 

এলোভেরা তে আছে এনজাইম, যা আমাদের চুল বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আপনার যদি কিছুটা চুল পরেও তাহলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে সেই চুল পড়া ফাঁকা জায়গায় আবার নতুন করে চুল গজাবে। আপনি পরিমাণ মতো অ্যালোভেরা জেল নিয়ে চলে লাগিয়ে রাখুন। ঘন্টা খানেক পর হালকা গরম পানিতে ভালো করে আপনার চুলটা ধুয়ে নিন। আপনি প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এভাবে এলোভেরা জেল চুলের ব্যবহার করলে দারুন উপকার পাবেন। 

লেখকের মন্তব্য 

পরিশেষে বলতে পারি আপনার মাথা থাকলে মাথায় চুল থাকবে এবং চুল থাকলে চুল প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ১০০ পড়তে পারে এতে সমস্যার কিছু নেই। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনার আপলো ড উপকৃত হয়েছে। যদি আপনাদের আরো কিছু জানার থাকে তবে আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন পরবর্তীতে আমরা সে বিষয়ে আলোচনা করে আপনাদের বিস্তারিত জানিয়ে দিব। আর অবশ্যই একটা লাইক দিবেন। এবং অন্যান্যরাও যেন এ বিষয়ে জানতে পারে সেজন্য আপনার বন্ধুদের মাঝে একটু শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url