ঠান্ডা-কাশি থেকে সমাধান ও ওষুধের নাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন



প্রিয় পাঠক, আসসালামু আলাইকুম, আপনারা কেমন আছেন। আজ আপনাদের সামনে একটা নতুন আর্টিকেল নিয়ে হাজির হয়েছি ‌। এখন গরমের মৌসুম চলছে। এই গরমে অনেকেরই ঠান্ডা-কাশি লেগেই থাকে। ঠান্ডা কাশি সম্পর্কে আজ বিস্তারিত আপনাদের জানাবো। আশা করি আপনারা মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়লে এ সম্পর্কে একটা বিস্তারিত ধারণা পাবেন।
ঠান্ডা কাশি একটি সাধারন সমস্যা আমাদের এই বাংলাদেশে। আসলে ঠান্ডা কাশি এই সমস্যাটা আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে হয়ে থাকে। ঠান্ডা কাশি একটা সাধারণ সমস্যা মনে হলেও অনেক সময় এটা আমাদের মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

ভূমিকা

ছোট থেকে বড়দের সবারই কমবেশি ঠান্ডা-কাশি লেগে থাকে। কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে এসব সমস্যা থেকে আপনি মুক্তি পেতে পারেন। ঠান্ডা লাগার লক্ষণ, ঠান্ডা কাশির ওষুধ সম্পর্কে আলোচনা করব। ঠান্ডার জন্য কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন জ্বর হলে প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন। কখন আপনাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। এ সকল পরামর্শ থাকতে আজকের এই আর্টিকেলে।

ঠান্ডা কাশি

সাধারণত এসব রোগের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে যাওয়ার দরকার হয় না। কিছু নিয়ম কানুন মেনে চললে ঘরে বসেই এসব রোগের যত্ন নেওয়া যায়। সারা বছর জুড়ে ঠান্ডা কাশি সমস্যা থাকলেও ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এই সমস্যাগুলি সাধারণত বেড়ে যায়। তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন যদি আপনি করেন তাহলে এসব রোগের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায়। নিম্নে কিছু নিয়ম-কানুন দেওয়া হলো এসব উপদেশ আপনারা মেনে চললে ঠান্ডা কাশি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ঠান্ডা কাশির লক্ষণ

সাধারণ সর্দি কাশি ও ফ্লু এর লক্ষণ প্রায় একই রকমের। তবে ঠান্ডা কাশির তুলনায় ফ্লু এর তীব্রতা একটু বেশি হতে পারে। ফ্লু সেরে উঠতে একটু বেশি সময় লাগতে পারে। তবে শিশুদের তুলনায় কখনো কখনো বড়দের লক্ষণগুলো বেশিদিন ধরে থাকতে পারে। এছাড়াও শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বরের পাশাপাশি ডায়রিয়া ও বমির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

ঠান্ডা কাশির ঔষধ

ঠান্ডা কাশি সাধারণত ওষুধ ছাড়াই ১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়। ফ্লু সাধারণত ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে আপনি আপনি ঠিক হয়ে যায়। তবে এসব রোগের লক্ষণ দেখে কিছু ওষুধ আপনি সেবন করতে পারেন।

প্যারাসিটামল

ব্যথা ও জ্বরের জন্য আপনি প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন। আপনি যদি প্যারাসিটামাল সেবন করেন তাহলে অন্য কোন ব্যথার ওষুধ ঠান্ডা কাশির, হারবাল ওষুধ, কফ সিরাপ এগুলোর সেবনের বিষয়ে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এসব ওষুধের মধ্যেই প্যারাসিটামল থাকে। ফলে প্যারাসিটামল এর সাথে অন্যান্য যদি সিরাপ খান তাহলে অতিরিক্ত পরিমাণে প্যারাসিটামল সেবনের ঝুঁকি থাকে। 

নাক বন্ধের ড্রপ

সাধারণত এগুলোকে ন্যাসাল ড্রপ বলা হয়। আপনার নাক বন্ধ হয়ে গেলে সব ড্রপ ব্যবহার করা হয়। তবে আপনি একটানা সাত দিনের বেশি ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি করেন তাহলে নাকের অন্যান্য সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এক সপ্তাহের মধ্যে যদি আপনার সমস্যার উন্নতি না হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। 


কফ সিরাপ

সাধারণত ঠান্ডা-কাশি বেশি হলে ওষুধ হিসেবে কফ সিরাপ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন অ্যাডভাস, ডিভাস এসব গ্রুপের ওষুধ আপনি সেবন করতে পারেন।

এন্টিস্টামিন

* নাক দিয়ে পানি পড়া হাঁচি কাশি কমানোর জন্য আপনি এন্টিহিস্টামিন গ্রুপের ওষুধ সেবন করতে পারেন। আবার অনেকের কাছেও এগুলো এলার্জির ওষুধ হিসাবে পরিচিত।

* ঠান্ডা কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা

* ঠান্ডা কাশি ও ফ্লু সারাতে নিচের পরামর্শ গুলো মেনে চলুন

* আপনি বিশ্রাম নিতে পারেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে আর

* আপনার শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখুন

* আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। পানির পাশাপাশি অন্যান্য তরল খাবারও উপকারী। যেমন চিড়াপানি সুখ ডাবের পানি ফলের জুস ইত্যাদি। পানিশূন্যতা এড়াতে এ সকল খাবার পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।

* আপনার যদি ঠান্ডা কাশির সাথে গলা ব্যাথা হয় তাহলে কুসুম কুসুম গরম পানি ভিতর সামান্য লবন দিয়ে গর গর করতে পারেন। তবে শিশুরা ঠিকমতো গরগর করতে পারেনা তাই তাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে না।

* আপনার গলা ব্যথা ও ঠান্ডা উপশমের জন্য মধু খেতে পারেন।।

* ঠান্ডা কাশি উপশমে ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল খেতে পারেন এতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে এবং ঠান্ডা কাশি দূরত্ব সেরে উঠবে।

কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে

* ঠান্ডা-কাশি যদি আপনার তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

* শিশুদের জ্বর আসলে বা ঘন ঘন জ্বর আসলে বা শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়লে বা যেকোনো বয়সী শিশুকে নিয়ে শঙ্কা থাকলে।

* অনেকেরই স্বাস্থ্য বিভিন্ন সমস্যা থাকলে যেমন হৃদরোগ, কিডনি রোগ, ফুসফুসের রোগ ও ডায়াবেটিস।

* অনেকেরই আছে অনেক ধরনের চিকিৎসা নেন এতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় যেমন কেমোথেরাপি ও লম্বা সময় ধরে স্টেরয়েড সেবন করলে।

* অনেক সময় জ্বরের সাথে কাঁপুনি হলে।

জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ

শিশুদের ক্ষেত্রে

* খিচুনি দেখা দিলে

* ঠোঁট ও মুখ নীল হয়ে গেলে

* পানি শূন্যতা হওয়া এর কিছু লক্ষণ যেমন ৮ ঘন্টায় একবারও প্রসব না হওয়া মুখ শুকিয়ে যাওয়া এবং কান্না করলে চোখে পানি না আসা।

* শিশু দ্রুত শ্বাস নেওয়া অথবা শ্বাসকষ্ট হওয়া

* শিশুরা যখন শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে পাঁজরের হাড় ভেতরে ঢুকে যাওয়া

* শিশুর মাংস শীতের তীব্র ব্যথা এই ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে শিশুরা ভাতা চলাফেরা পর্যন্ত করতে পারে না।

* শিশুদের জ্বর যদি ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর উপরে যায়।

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে

* শ্বাসকষ্ট হওয়া

* তলপেটে ব্যথা বুকে ব্যথা এবং ব্যথা চাপ চাপ লাগা

* অনবদ্য মাথা ঘুরানো জীবনী ও বিভ্রান্তি

* প্রসাব না হওয়া

* প্রচন্ড শারীরিক দুর্বলতা ও অস্থিরতা

* ঠান্ডা-কাশির সাথে রক্ত যাওয়া

এ সকল সমস্যা যদি দীর্ঘদিন যাবত থাকে লক্ষণ গুলো যদি বেড়েই যায় ঠান্ডা কাশি কিছুটা কমার পর আবার বেড়ে যায় তাহলে রোগীকে অবশ্যই দূরত্ব নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

ঠান্ডা কাশি প্রতিরোধের উপায়

*এ সমস্ত রোগ সহজেই একজন থেকে আরেকজনের কাছে সরাতে পারে। তবে কিছুটা পদক্ষেপ নিলে সেগুলো ঠেকানো সম্ভব। যদি কোন ব্যক্তি ঠান্ডা কাশিতে আক্রান্ত হয় পুরোপুরি সেরে না যাওয়া পর্যন্ত অন্যান্য ব্যক্তি সংস্পর্শ আসলে সব জীবাণু সরাতে পারে।

*যদি আপনার সম্ভব হয় আপনার কাছ থেকে ছুটি নিয়ে ঘরে বিশ্রাম নিন। এবং মানুষের সংস্পর্শে আশা থেকে বিরত থাকুন।

*জ্বর যদি আপনার ছেড়ে যায় আবার যদি ঘন ঘন জ্বর আসে তাহলে জরুরী প্রয়োজন ছাড়া আপনি ঘরের বাহিরে বের হবেন না।

*যতদিন পর্যন্ত সুস্থ না হবেন ততদিন জনসমাগম এড়িয়ে চলতে পারে। সম্ভব হলে কারো সাথে হ্যান্ডশেক করবেন না। বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করবেন।

*আপনি যখন ঢাকি কাশি দিবেন তখন অবশ্যই অন্যদের থেকে একটু দূরে যাবেন এবং টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে হাসি কাছে দিবে। আপনার ব্যবহৃত কিছুটি নিরাপদ স্থানে ফেলে দিবেন। যদি আপনার হাতের কাছে কোন ধরনের টিস্যু না থাকে তাহলে আপনার কোন এর ফাঁকে হাসি কাছে দিন এবং হাসি-কাঁচি দেওয়ার পরে এগুলো ধুয়ে ফেলতে পারেন। তাহলে অন্যদের এই ভাইরাস জীবাণু যেতে পারবে না।

*আপনাকে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। এ তো আপনি এগুলো রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ঠান্ডা কাশির ঔষধের নাম

হিস্টাসিন

ডেসলার

নাপা এক্স টেন

নিউ সিলর

ডক্সিক্যাপ

কার্ভা ৭৫

সেপোটি

সিনারণ

সি নারন প্লাস

এডভাস

ডেভাস

টোফেন

ঠান্ডা কাশ্মীর ক্যাপসুল এর নাম

এমব্রক্স এসআর ৭৫

একরেক্স ৩০

এমবেট ৭৫

এম্বোজিন এসআর ৭৫

এমব্রক্সাল 75

ঠান্ডা কাশির সিরাপ এর নাম

এমব্রক্স

এডভাস

ডিভাস

তুসকা

এমবলিট

ও কপ

লেখকের মন্তব্য

ঠান্ডা কাশি আমাদের একটি সাধারন রোগ। শীত শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমরা সাধারণত সব সমস্যায় ভুগে থাকি। আবার অনেক সময় গরমেও এসব ঠান্ডা কাশি সমস্যা থাকে আমাদের। এ সকল সমস্যা বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করেছি কিছু ঔষধের নাম উল্লেখ করেছি এগুলো সেবন করে আপনি প্রাথমিকভাবে এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আশা করি এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তবে অবশ্যই একটা লাইক দিবেন এবং অন্যান্যরাও যেন জানতে পারে তার জন্য বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন। আশা করি আপনারা খুব উপকৃত হয়েছেন। ধন্যবাদ সবাইকে।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url