Post Page After Menubar Ad

পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতি ও বীজ উৎপাদন কৌশল

পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। পেঁয়াজ সাধারণত একটি সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল। পিয়াজ ছাড়া রান্না হবে এটা কল্পনাই করা যায় না। পিয়াজে আছে ভিটামিন শর্করা আমিষ সহ অনেক পুষ্টি উপাদান। একটি বড় মাপের পেঁয়াজে আছে ৮৫.৮% পানি , ১.২ শতাংশ আমিষ, ১১.৮% শর্করা ,০ . ১৭ শতাংশ ক্যালসিয়াম , ০.৫ শতাংশ ফসফরাস , ০.৬ শতাংশ লোহা । পিয়াজে আরও গুনাগুন রয়েছে যেমন ভিটামিন এ,বি, ও সি। পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথে থাকুন ।




পিয়াজে যে গুণাবলী আছে তা বলে শেষ করা যায় না। পিয়াজে আছে কেয়ার সেটিন যা আমাদের রক্তের খারাপ কোলেস্টরেলের পরিমাণ কমায় এবং ভালো কোলেস্টরেলের পরিমান বাড়ায়। পিয়াজের বীজ উৎপাদনের কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন ।

ভূমিকা

আমাদের দেশে একটা অর্থকরী ফসল পেঁয়াজ । পেঁয়াজ চাষ করতে হলে প্রথমে আপনাকে উর্বর জমি বেছে নিতে হবে । আমরা সাধারনত বেলে দোআঁশ মাটিতে চাষ করি । প্রথমে পিয়াজের জাত নির্বাচন করতে হবে । ভালো জাতের বীজ রোপণ করতে হবে । এটাতে আছে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদন । যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । আমাদের হজমের সহয়তা করে । আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবারের সঙ্গে পেঁয়াজ খেয়ে থাকি । আবার এই পেঁয়াজে কিছু অপকারিতা আছে । এটা বেশী খেলে শরীরের চুলকানি হতে পারে । আবার অ্যালার্জি হতে পারে । যাদের এ ধরনের সমস্যা আছে তাদের পেঁয়াজ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে । পেঁয়াজ বেশী খেলে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে । অনেক সময় পেয়াজের ঝাঁজে আমাদের চোখের সমস্যা দেখা দিতে পারে । পেঁয়াজ থেকে বীজ উৎপাদন করতে হলে আপনাকে ভালো জাতের পেঁয়াজ থেকে বীজ উৎপাদন করতে হবে । যে সব পেয়াজের জমিতে
আগাছা থাবেনা , পোকামাকড় থাকবেনা সেই সব জমির পেঁয়াজ থেকে বীজ উৎপাদন করতে হবে ।

পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতি

পেঁয়াজ চাষ করতে হলে আপনাকে প্রথমেই উপযুক্ত জমি বা মাটি বেছে নিতে হবে। আমরা সাধারণত বেলে দোআঁশ মাটি বা উর্বর মাটিতে চাষ করে থাকি। যে জমিতে পানি জমে না সেইসব জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযোগী এবং ভালো সেচ ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।। পিয়াজ চাষের জন্য আপনাকে পেঁয়াজের জাত নির্বাচন করতে হবে যেন তেন পিয়াজ লাগালেই তো আর পিয়াজ হবে না।

এজন্য আপনাকে পেয়াজের চাষ করতে হলে বারি পেঁয়াজ ১ , বারি পেঁয়াজ ২ , বারি পেঁয়াজ ৩ , বারি পেঁয়াজ ৪ , বারি পেঁয়াজ ৫ জাতের বীজ বপন করতে হয় , এছাড়াও স্থানীয় কিছু জাত আছে যেমন তাহের পুরী , ঝিটকা ,অনেক জাতের বীজ আছে যা আমরা স্থানীয় ভাবে বীজ রোপণ করে থাকি । বীজ রোপন করার আগে কিছু নিয়ম কানুন আছে যেমন বীজ যেদিন রোপন করবেন তার আগের দিন সন্ধ্যার আগে বীজকে ভালো করে ভিজিয়ে রাখতে হবে।

পরের দিন সকাল বেলা সেগুলো তুলে এক থেকে দেড় ঘন্টা আর রোদে শুকিয়ে বীজ তলায় বপন করতে হবে। বীজ বপন করে তারপর ঝুরঝুরে মাটি দিয়ে সেই বীজ কে ঢেকে দিতে হবে। ঢেকে দেওয়ার পর সেই বীজে ছায়া ব্যবস্থা করতে হবে দিনের বেলায় ঢেকে দিতে হবে এবং রাত্রিতে সেগুলো আবার খুলে ফেলতে হবে প্রয়োজন মত আপনি সেই বীজ তলার উপরে হালকা পানি ছিটিয়ে দিতে পারেন।


পেঁয়াজ চাষ করতে হলে আপনাকে এগুলো ভালো করে মেনে চলতে হবে। ভালো বীজে ভালো ফসল এটা আপনাকে মনে রাখতে হবে । বীজ তলা থেকে বীজ ফুটে বের হলে সেগুলোকে যত্ন নিতে হবে। চারা একটু বড় হলে সেগুলোকে জমিতে লাগানোর প্রস্তুতি নিতে হবে।

পেয়াজের বীজ উৎপাদন

আমাদের দেশে একটা অর্থকারী ও সবজি জাতীয় ফসল হলো পেঁয়াজ। আমাদের দেশে অধিকাংশ জেলাতেই চাষ করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাজশাহী বগুড়া ফরিদপুর কুষ্টিয়া মেহেরপুর পাবনা অন্যতম। দৈনন্দিন কাজে আমাদের পেঁয়াজ রান্নাবান্নার জন্য ব্যবহার করা হয়। আমাদের দেশে যতটুকু পেঁয়াজের বীজের দরকার তার কিন্তু খুব অল্প অংশই আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যোগান দিয়ে থাকে।

ভালো নিজের জন্য সাধারণত ঠান্ডা আবার প্রয়োজন হয়। আপনি যে সকল পেঁয়াজ থেকে বীজ উৎপাদন করবেন সেই সকল পেঁয়াজের জমি অবশ্যই এটেল দোআঁশ মাটি হতে হবে। আপনি যদি অধিক ফলন চান তাহলে উৎকৃষ্ট পেঁয়াজের বীজ থেকে ভালো বিষ সংগ্রহ করতে হবে। ভালো বীজ সংগ্রহ করতে হলে আপনাকে প্রথমেই পেঁয়াজের মাতৃকোণ্ড নির্বাচন করতে হবে। যেসব পেঁয়াজের ওজন 16 থেকে 21 গ্রাম সেইসব পেঁয়াজ থেকে বীজ কন্দ ভালো।

আপনি যদি ভালো পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করতে চান তাহলে জমি থেকে যেগুলো খারাপ পেঁয়াজ সেগুলো সংগ্রহ করে ফেলে দিতে হবে। ভালো পেজ থেকে ভালো বীজ উৎপাদন এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যখন পেঁয়াজ থেকে বীজ উৎপাদন করবেন তখন সাধারণত বৃষ্টিপাত একটা কম হয় এজন্য জমির অবস্থা বুঝে পানি দেওয়া উচিত।

যখন জমিতে পানি দিবেন তখন সার দেওয়া খুব জরুরী। আবার এটাও দেখতে হবে জমিতে আগাছা আছে কিনা আগাছা থাকলে তা পরিষ্কার করতে হবে। রোগ বালাই যাতে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি পেঁয়াজের রোগ লাগে তাহলে রভ্লাল জাতীয় বিষ দুই মিলি হারে স্প্রে করতে হবে।

পেঁয়াজ কলি আসলে কি

পেঁয়াজ একটি সবজি জাতীয় ফসল । এর বৈজ্ঞানিক নাম হল এলিয়াম সেপা । শীত মানে নানা রকম সবজির বাহার। এর মধ্যে একটি পরিচিত সবজি হলো পেয়াজকলি পেঁয়াজের কলি। সবুজ রঙের এই সবজি আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। পেঁয়াজের কলিতে নানা রকম ব্যথা পোষণকারী উপাদান থাকায় আমাদের মাংসপেশী এবং হাড়ের ব্যাথা থেকে মুক্তি পেতে পারি। পেঁয়াজের কলিতে এন্টি পাইরোটিক উপাদান থাকে বলে আমাদের জ্বর দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

এটাতে সালপার থাকে বলে শরীরের শর্করার মাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যা আমাদের ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ ভালো এটাতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে যা আমাদের শরীরের হজম প্রক্রিয়া করতে সহায়তা করে। পেঁয়াজের কলিতে থাকায় আমাদের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। এটাতে ভিটামিন এ থাকে এজন্য সালাতের সাথে খেলে শরীরের অনেক পুষ্টি চাহিদা ও পূরণ হয়। আপনি যদি এই পিয়াস কলি সবজিটি সংরক্ষণ করতে চান তাহলে কিছু টিপস জেনে নেওয়া জেনে নিতে পারেন।

কিনার সময় এটা টাটকা ও ভালো দেখে কিনতে হবে এবং পেঁয়াজকলি গুলো ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। ধোয়ার পরে পানি গুলো ছাড়িয়ে নিবেন এবং ভালো করে শুকিয়ে নেবেন একটি গামছা অথবা দিয়ে মুছে নিবেন পানি থাকলে তা সংরক্ষণ করতে অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এবার কলি গুলো ভালো করে কেটে নিন কাটা হয়ে গেলে একটা ভালো কন্টেনার নিন। ভালো পলিথিনেও রাখতে পারেন এরপর সেগুলো ভালো করে মুখ আটকে রাখবেন এরপরে ডিপ ফ্রিজে আপনি সংরক্ষণ করে সারা বছর খেতে পারবেন।

কাঁচা পেঁয়াজের উপকারিতা

কাঁচা পেঁয়াজ রয়েছে অনেক ধানের পুষ্টি যা খেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধ করতেও সক্ষম। এটাতে ভিটামিন সি থাকায় আমাদের মুখের জন্য বেশ উপকারী যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে কাজ করে। রান্নার প্রধান উপকরণ হলো পেঁয়াজ এই কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়ার প্রচলন অনেক আগে থেকেই আছে আমাদের বিশেষ করে বাঙালিদের সাথে এই রীতি অনেকভাবে জড়িত ।

আমরা সাধারণত পান্তা ভাতে কাঁচা পেঁয়াজ খাই সিঙ্গারা সালাত ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খাবারের সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ খেয়ে থাকি। আবার হোটেলে খেতে গেলে অনেক সময় আমাদের কাঁচা পেঁয়াজের সালাত দেয়। এটাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে বলে এটা খেলে রক্তচাপরি নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন যারা অনেক সময় রক্তচাপ সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এটা খেতে পারেন।

কাঁচা পেঁয়াজ কাটলে একটা ঝাঁঝালো গন্ধ হয় তবে এটা জৈব সারপার থাকে বলে এটা হয়। কাঁচা পেঁয়াজে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে দূষণমুক্ত করতে পারে বিদায় শরীর অনেকটা তরতাজা থাকে। যারা ডায়াবেটিসে ভোগেন তারা কাঁচা পেঁয়াজ খেলে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা বাড়তে পারে।

কাঁচা পেঁয়াজের অপকারিতা

কাঁচা পেঁয়াজের কিছু অপকারিতা আছে। এটা বেশি খেলে মুখের দুর্গন্ধ হতে পারে। কাঁচা পেঁয়াজ বেশি খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো নয় আমাদের দেহে পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে এতে আমাদের হার্ডএড সমস্যা হতে পারে। যাদের শরীরে এলার্জি আছে তাদের জন্য মোটেও পেঁয়াজ কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া উচিত নয়। এটা বেশি খেলে আমাদের এলার্জি হতে পারে শরীরের চুলকানি হতে পারে শরীরের জ্বালা যন্ত্রণা হতে পারে এবং এলার্জির মতো অনেক লক্ষণ আমাদের দেখা দিতে পারে।

আমরা যখন পিঁয়াজ কাটি তখন একটা ঝাঁঝালো রস বের হয় যা আমাদের চোখের পানি বের হতে সাহায্য করে এটা আসলে ক্ষতিকর। কাঁচা পেঁয়াজ আমাদের মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে। আপনি যদি বেশি পরিমাণে এটা খান তাহলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে এবং এতে আপনার পায়খানার সমস্যা হতে পারে। আপনার যদি পেটের অধিক সমস্যা থেকে থাকে তাহলে এই পেঁয়াজ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কাঁচা পেঁয়াজে আপনার হজম প্রক্রিয়া আরো সমস্যা করতে পারে।

লেখকের মন্তব্য

পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে , বীজ উৎপাদন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি । কি ভাবে চাষ করতে হয় , পেয়াজের ফুল সংরক্ষণ কি ভাবে করতে হয় । এর কিছু উপকারিতা আছে আবার কিছু অপকারিতাও আছে । আপনার যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে একটা লাইক দিবেন এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url