লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম ও এর উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে জেনে রাখুন
প্রিয় পাঠক, আমার ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম ও উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে আজ বিস্তারিত আলোচনা করব। এ সম্পর্কে হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন কিন্তু কিন্তু যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। আশা করি মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়লে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
রান্নার কাজে অতি সুপরিচিত একটি মসলা হল লবঙ্গ। এটি সুগন্ধিযুক্ত মসলা হিসাবে আমরা চিনে থাকি। যেকোনো ধরনের খাবারের সুস্বাদু করার জন্য এই লবঙ্গ ব্যবহার করা হয়ে থাকে । আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য লবঙ্গের অবদান অনেক।
ভূমিকা
যদি আপনি লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে না জানেন তবে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আপনি ধৈর্য সহকারী আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। আজকে এই আর্টিকেলে উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে ও লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে, এর গুনাগুন সম্পর্কে বা পুষ্টিগণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে এই আর্টিকেলে।
লবঙ্গের পুষ্টিগুণ
ইউনাইটেড স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার এর তথ্য মতে, প্রতি ১০০গ্রাম লবঙ্গতে আছে, প্রোটিন ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ৭০ গ্রাম, সুগার ৩ গ্রাম, শক্তি ২৭৫ কিলো ক্যালরি, লিপিড ১৪ গ্রাম ও ফাইবার আছে ৩৫ গ্রাম ।
এছাড়াও লবঙ্গে তে আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ যেমন পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ,ক্যালসিয়াম, আয়রন, সোডিয়াম, জিংক এবং ফসফরাস।
লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা
লবঙ্গ আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে এবং সর্দি ও কাশির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধিতে লবঙ্গর কোন জুড়ি নেই। তবে অতিরিক্ত লবঙ্গ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। চলুন এবার জেনে নেওয়া লবঙ্গের উপকারিতা এবং অপকারিতার বিভিন্ন দিক।
হজম শক্তি বাড়ায়
লবঙ্গ আমাদের শরীরের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। লবঙ্গতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও গ্যাস্টিকের বিভিন্ন সমস্যা এবং নোশিয়ার মত সমস্যা থেকে মুক্তিযুদ্ধে লবঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
বমি ভাব দূর করে
আপনি যদি বাসে বা ট্রেনে ভ্রমণ করেন সে সময় অনেকেরই মাথা ঘুরে এবং বমি বমি ভাব হয়। এজন্য আপনাকে এক টুকরো লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষে সেই রস খেলে মাথা ঘোরা এবং বমি ভাব কমে যাবে। যে সকল মায়েরা গর্ভবতী তাদের যদি বমি বমি ভাব আসে তাহলে প্রতিদিন সকালে লবঙ্গ চুষলে এই ভাব দূর হবে। লবঙ্গের ঝাঁঝালো গন্ধ বমি দূর করতে অনেকটা সহায়তা করে।
দাঁতের ব্যথা কমাতে
দাঁতের ব্যথা দূর করতে সহায়তা করে লবঙ্গ ও মারিক হয় নিরাময় করতে সাহায্য করে। লবঙ্গতে আছে এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে নিমেষেই তাদের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। যাবে মুখের দুর্গন্ধ আছে তারা এই লবঙ্গ টানা দুই একটি মুখে নিয়ে চাবাতে পারেন এতে আপনার মুখের দুর্গন্ধ অনেকটা দূর হবে। বাজারে যেসব টুথপেস্ট পাওয়া যায় তার মধ্যে একটা উপকরণ হলো লবঙ্গ।
খাবারের রুচি বৃদ্ধিতে
আমরা যখন বিভিন্ন রোগে ভুগে থাকি বিশেষ করে জ্বরে ঢোকার পর যখন সেরে যায় তখন আমাদের খাবারের অরুচি দেখা দেয়। মাছ মাংস এমন কি বিভিন্ন উপাদেয় খাবার খেয়েও যখন মুখে রুচি হয় না সে ক্ষেত্রে লবঙ্গ গুড়া করে খালি পেটে দুপুরে খাবার পরে খেলে খাবারের রুচি অনেকটা ফিরে আসবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
যে সকল ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের শরীরে বিশেষ করে ইনসুলিন তৈরি হতে পারে না। এক্ষেত্রে লবঙ্গের রস আপনাদের শরীরের ইনসুলিন তৈরিতে সহায়তা করে এবং কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় ও রক্তে সুগারের মাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রনে রাখে।
শ্বাসতন্ত্রের জন্য ভালো
বহু বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে সর্দি-কাশির মহা ওষুধ হিসাবে। লবঙ্গ খেলে এটা আমাদের শরীরে জীবাণুবিরোধী বৈশিষ্ট্য শ্বাসতন্ত্রের জন্য দেশ উপকারী একটি উপাদান। সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্টের যেসব রোগীরা আছেন তারা এই লবঙ্গ খেলে এ থেকে অনেকটা নিস্তার পাবেন। আপনি যদি লবঙ্গ চিবিয়ে খান তাহলে ঠান্ডা লাগা, সর্দি লাগা ,বিভিন্ন সমস্যা থেকে সুফল পাবেন।
হাড়ের জন্য ভালো
ভিটামিন কে ও ম্যাঙ্গানিজের একটি ভালো উৎস হল লবঙ্গ। লবঙ্গ খেলে আমাদের শরীরে হার তৈরিতে এবং হাড়ের খনিজ পদার্থগুলো ঠিক রাখতে সহায়তা করে। তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই লবঙ্গ রাখবেন এতে আপনার হারকে শক্তিশালী করবে। অনেক বয়স্ক লোকদের হাড় ফাঁপা হওয়ার একটা প্রবণতা দেখা যায় এতে আপনার যদি লবঙ্গ খান তাহলে আপনার এই সমস্যায় বেশ উপকারে আসবে।
লবঙ্গ খাওয়ার অপকারিতা
* যদি আপনি লবঙ্গ খাওয়ার উপকারিতা পেতে চান তাহলে একদম বেশি খাওয়া যাবেনা। অনেকেই আছেন যারা মুখের মধ্যে লবঙ্গ রেখে চুষতে থাকে যা আমাদের শরীরে উপকারের চেয়ে অপকারী হয় বেশি।
* আপনাদের যদি কারো এলার্জির সমস্যা থাকে এক্ষেত্রে লবঙ্গ খেলে চুলকানির বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। এ সকল সমস্যা থাকলে অবশ্যই লবঙ্গ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
* আপনার যদি শরীরে বিভিন্ন সমস্যা থাকে বিশেষ করে রক্তক্ষরণ জনিত সমস্যা, এলার্জি, বা গর্ভবতী হন অবশ্যই লবঙ্গ খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।
* একটি কথা সবসময় মনে রাখবেন লবঙ্গ কিন্তু ঔষধ নয়, এটি একটি মসলা। তাই যদি আপনি শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় লবঙ্গের উপর নির্ভর না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম
লবঙ্গ সাধারণত এক ধরনের মসলা যা আমরা রান্নায় ব্যবহার করে থাকি। রান্না খারাপ যেভাবে লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে।
* চায়ের সাথে খেতে পারেন। আপনি যখন চা খাবেন চায়ের পানি গরম করার সময় ৩-৪ টা লবঙ্গ দিয়ে চা খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
* গরম পানি ফুটিয়েও এর সাথে লবঙ্গ দিয়েও খেতে পারে
* মধুর সাথে লবঙ্গ মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
* যদি আপনি সকাল বেলা খালি পেটে লবঙ্গ খান তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
* এছাড়া আপনি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেতে পারেন।
লেখকের মন্তব্য
লবঙ্গের উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও লবঙ্গ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে একটি খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় প্রতিদিন কয়টি করে লবঙ্গ খাওয়া যেতে পারে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলটি করে উপকৃত হয়েছে। যদি এই পোস্টটি পড়ে প্রীত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে ভুলবেন না। আর অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে এই আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ সবাইকে
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url