আইফেল টাওয়ার এর ইতিহাস ও ফরাসি বিপ্লব



আইফেল টাওয়ার ফ্রান্স এর একটি গর্ভ । এটা শুধু ফ্রান্স এর আকর্ষণ তা নয় গোটা বিশ্বের কাছে একটি পরিচিত নাম । আইফেল টাওয়ার দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের হিটলার এটাকে ধ্বংস করতে চেয়ে ছিল । কিন্তু তা অমান্য করা হয়েছিল । আইফেল টাওয়ার নির্মাণ করার ২০ বছর পর এটাকে খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছিল । তবে এটা খুলে ফেলার আগেই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পরে সারা বিশ্বে ।

যুগ যুগ ধরে দাড়িয়ে থাকা এই টাওয়ার , লোহার কাঠামো দিয়ে তৈরি করা এই স্তম্ব মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে । পর্যটক দের কাছে এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান । সারা বছর জুড়েই এখানে পর্যটক থাকে পৃথিবীর এই আকর্ষণীয় স্থান আইফেল টাওয়ারে ।

ভূমিকা

আইফেল টাওয়ার এর ইতিহাস সম্পর্কে এখন সবাই কম বেশী জানে । ১৮৮৭ সালে প্রথম আইপিএল টাওয়ার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এবং নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৮৮৯ সালে। এই টাওয়ারের স্থপতি ছিলে গুস্তাফ আইফেল । এটি একটি দর্শনীয় স্থান সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এই আইফেল টাওয়ার দেখতে আসে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। ৩০০ মিটার লম্বা এই টাওয়ার টি মানুষের কাছে খুব আকর্ষণীয় বা পর্যটন জায়গা হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এই টাওয়ারের আলোকসজ্জা ঘন্টায় ঘন্টায় পরিবর্তন করা হয়। যা পর্যটকদের আকর্ষণীয় করে তোলে।

আইফেল টাওয়ার এর ইতিহাস

আইফেল টাওয়ার অবস্থিত ফ্রান্স এর প্যারিসে । ফরাসি ভাষায় একে বলে La Tour Eiffel . গুস্তাফ আইফেল তিনি একজন ফরাসি বাস্ত প্রকৌশলী ও স্থাপতি। তিনি ছিলেন বিখ্যাত আইফেল টাওয়ারের স্থপতি যেটা ১৮৮৯ সালে প্যারিসে উদ্বোধন করা হয়েছিল। এছাড়াও আমেরিকার স্ট্যাচু অফ লিবার্টি নির্মাণ কাজেও বিরাট ভূমিকা রাখেন। ফরাসি সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ছিলেন আইফেল এর বাবা।

আইফেল জম্মের পর তার বাবা সেনাবাহিনীর চাকরিটি ছেড়ে দেন। চাকরি ছাড়ার কারণ তার মাকে ব্যবসার কাজে সাহায্য করার জন্য চাকরিটা ছাড়েন তার মা ছিলেন একজন কয়লা ব্যবসায়ী যেটা তিনি পেয়েছিলেন পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে তাই উভয়ই তাদের কয়লা ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। প্যারিসের বেশ ভালো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশলী নিয়ে লেখাপড়া করেন আইফেল।

তিনি রসায়ন বিভাগে ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৮৮৪ সালে আইফেল টাওয়ারের প্রথম নকশা প্রদর্শন করা হয়। ১৮৮৭ সালে ২৮ শে জানুয়ারি আইফেল টাওয়ারের প্রথম নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ৩০০ জন শ্রমিক মাত্র দুই বছর দুই মাস দুই দিনে আইফেল টাওয়ারটি নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল ১৮৮৯ সালের ৩১ শে মার্চে।

ফরাসি বিপ্লবের স্মরণে

লোহা বা ধাতুর এই খাচাটি তৈরি যখন করা হয় তখন ফ্রান্সের মানুষ বোঝেনি এর কদর কত। এই টাওয়ারটি আজ গোটা বিশ্বের কাছে প্রধান আকর্ষণীয় হিসেবে পরিচিত। ২০২৪ সালে এই টাওয়ারটি ১৩৭ বছর পূর্ণ করে। ফরাসি বিপ্লবের যখন ১০০ বছর পূর্ণ হয় সে সময় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আসর বসেছিল। ফরাসি বিপ্লবকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এই টাওয়ার তৈরি করা হয়েছিল।

১৮৮৭ সাল থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল দুই বছর। এরপর আস্তে আস্তে এই আইফেল টাওয়ারের খ্যাতি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এবং দলে দলে মানুষ বা পর্যটক আসতে শুরু করে এই আইফেল টাওয়ার দেখতে ততদিন এই টাওয়ারের নাম ডাক শুরু হয়ে যায়। সেই সময় ৩০০ মিটার লম্বা এই টাওয়ারটাই ছিল পৃথিবীর মানুষের কাছে সবচেয়ে উঁচু দর্শনীয় স্থান।

আইফেল টাওয়ার এর উচ্চতা 

১৯৫৭ সালে আইফেল টাওয়ারের উপরে একটি এন্টেনা বসানোর কাজ শুরু হয় তখন এর উচ্চতা দাঁড়ায় ৩২৪ মিটার। ৭৩০০ টন ইস্পাত দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল এই আইফেল টাওয়ার। তখনকার সময় রেডিও সংকেত ও টেলিগ্রাম পাঠানোর কাজেও এই টাওয়ারকে ব্যবহার করা হয়েছে। ১৯২১ সালে প্রথম রেডিও সম্প্রচার কাজ শুরু হয় এই আইফেল টাওয়ার থেকে।

সূর্য ডোবার পর থেকে প্রতি ঘন্টায় পাঁচ মিনিট করে আলোর নতুন নতুন সাজে মেতে ওঠে এই আইফেল টাওয়ার। ২০ হাজার বাল্বের আলোর ছটা অপুরুপ এক দৃশ্য মানুষকে উপহার দিয়ে থাকে এই আইফেল টাওয়ার। এইটা আবার নতুন করে সাজানোর বা পরিকল্পনার অভাব নেই এবং দিন দিন এর পর্যটক সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে।

আইফেল টাওয়ার এর গঠন

তিনটি স্তর নিয়ে গঠিত আইফেল টাওয়ার প্রথম তলা দ্বিতীয় তলা এবং শীর্ষ স্থান বা তৃতীয় তলা। প্রথম তলায় আছে জাদুঘর প্রদর্শনী একটি কাছের মেজে সুবহে নীরের দোকান এবং কিছু রেস্তেদা রয়েছে। দিতে তলায় আছে আরো কিছু রেস্তরা দোকান এবং কিছু পর্যবেক্ষণ এলাকা। তৃতীয় বা শীর্ষস্থান একটি পর্যবেক্ষণ এলাকা যা মাটি থেকে ২৭৬ মিটার উপরে।

তখনকার সময়ে এটি ইউরোপের সর্বোচ্চ উঁচু স্থান ছিল। একটি শ্যাম্পেন বার ও আছে এবং এর স্থপতি গুস্তাভ আইফেলের একটি অফিসের বিনোদনও পাওয়া যায়। এই টাওয়ারটি ধাতব অংশে নির্মিত প্রায় ১৮ হাজার এর বেশি ধাতব অংশ দ্বারা গঠিত এই টাওয়ার। ১৯৩০ সাল পর্যন্ত এটি পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ভবন হিসেবে পরিচিত ছিল।

পর্যটকদের দর্শনীয় স্থান

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত এই আইফেল টাওয়ার এটা প্যারিসের সেন্ট এন্ট্রয়িং জেলায় অবস্থিত সেন নদীর তীরে। এই আইফেল টাওয়ারটি প্যারিসের মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও পর্যটন এলাকা হিসেবে বেশি পরিচিত। এই টাওয়ারটি তার ইতিহাস এবং দর্শনীয় তার জন্য বেশি পরিচিত।। এটা শুধু প্যারিসের জন্য আকর্ষণীয় বা পর্যটক এলাকা হিসেবেই নয় এটা ছাড়া বিশ্বের কাছে পর্যটন হিসেবে বেশি পরিচিত।

এটি দেখতে প্রতিবছর প্রায় ৭ মিলিয়ন আরও বেশি পর্যটক এখানে আসা-যাওয়া করে। এর সূরায় উঠে পুরো শহরের সৌন্দর্য দেখা যায় বলে অনেক পর্যটক আকর্ষণ করে এই আইফেল টাওয়ার ‌। ফ্রান্সের জাতীয় অর্থনীতিতেও এইটার এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। বিশেষ বিশেষ দিনে এই টাওয়ারকে বিশেষ বিশেষ ধরনের সাজানো হয় যা দেখতে পর্যটকদের আকর্ষণীয় করে।

লেখকের মন্তব্য

আইফেল টাওয়ার এর ইতিহাস সম্পর্কে খুব সামান্য আলোচনা করেছি ,  টাওয়ার সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত। এটা দেখতে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আসে। এটা সম্পর্কে সামান্য কিছু আলোচনা করেছি যদি এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগে তবে একটি লাইক দিবেন এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url