করলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন



প্রিয় পাঠক, আসসালামুয়ালাইকুম , আপনারা কেমন আছেন। আজ আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি করল্লা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব বলে। করল্লা আমরা সবাই চিনি। এর নামটা মুখে আসলে কেমন যেন একটা তিত তিতো ভাব লাগে। যারা করলা সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি। আশা করি আপনারা মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়লে এ সম্পর্কে বিস্তারিত একটা ধারণা পাবেন।


করলা, করল্লা, উচ্ছা,উচ্ছে যে যে নামেই ডাকি না কেন এটা একটা জাতীয় সবজি। ইংরেজিতে একে Balsam pear, alligator pear, bitter gourd, bitter melon, bitter cucumber ইত্যাদি বলা হয়। তবে এর গুনাগুন বলে শেষ করা যাবে না।

ভূমিকা

করলা তেতো হলেও অনেকের কাছে এর গুরুত্ব অনেক বেশি। করল্লা একটি পুষ্টিগণ সমৃদ্ধ খাবার। আপনি যদি নিয়মিত করলা খান তাহলে আপনার হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে।ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। খাবারের রুচি আনে। করলা আমাদের শরীরের অনেক উপকার করলেও এর কিছু অপকারিতাও আছে । নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হল ।

করলার উপকারিতা

কয়লা খাওয়ার কথা ভাবলেই প্রথমে মাথায় আসে তিতো স্বাদের কথা ।করলা অনেক পুষ্টিগন আছে। একবারের স্বাদ যদি আপনার জিভে লাগে তবে আপনি এই সবজিটা থাকতে পারবেন না। চলুন জেনে না যাক করলার উপকারিতা আর কথা।

হজম ভালো করে

আমরা অনেকেই আছি যারা পেটের সমস্যায় বা হজমের সমস্যায় ভুগে থাকি। এটা সাধারণত খাবারের বিভিন্ন রকম সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। যদি আপনি নিয়মিত করোলা সবজি খান তাহলে আপনার হজম ক্ষমতা অনেক উন্নতি হবে। শরীরের হজম প্রক্রিয়ার জন্য করল্লা দারুণভাবে সাহায্য করে। আর যদি আপনি কষ্ট করে করলার জুস বানিয়ে খেতে পারেন। 

তাহলে আপনার হজম সমস্যা সহ শারীরিক অনেক সমস্যা দূর হবে। এসব শারীরিক উপকার পাওয়ার জন্য করোলার তেতো স্বাদ একটু নেওয়া যায়। কর লাইক টি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার এতে আপনার খাবারগুলো ভালো করে হজম হয় এবং পেট পরিষ্কার থাকে সেই সাথে আপনার শরীরের এসিডিটির সমস্যা অনেকটাই দূর করে।

সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে

যাদের ডায়াবেটিস আছে রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না তারা এই করলা সবজিটা খেতে পারে এতে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকবে রক্তের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখে এই করলা সবজি। আপনি যদি নিয়মিত এই করলার রস খান তাহলে আপনার ডায়াবেটিস সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হবে।

ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী

করলার রসে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ এবং সি যা ত্বকের জন্য খুব ভালো একটা উৎস। এই সবজি আমাদের মুখের ব্রণ এবং অন্যান্য ত্বকের ত্রুটিগুলি চিকিৎসা করে এবং বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে বিলম্ব করতে সাহায্য করে। সোরিয়াসিস এবং চুলকানি সহ আমাদের শরীরের বিভিন্ন চর্মরোগ এই করলা দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। করলার রস আমাদের চুলের জন্য খুব উপকারী এবং বিভক্ত প্রান্ত খুশকি এবং চুল পড়া বন্ধ করতে অনেকটা সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

করলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং ভাইরাস ও জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে ও এলার্জি ও বদহজম থেকে আমাদের রক্ষা করে। এই সবজির এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলি আমাদের শরীরের বিভিন্ন রঙের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে যা বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

তারুণ্য ধরে রাখে

করলা আমাদের শরীরের উত্তর রক্তচাপ ও চর্বি কমাতে সাহায্য করে। একটি তো রস আমাদের শরীরের কৃমিনাশক। এটা আমাদের চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি একটি ভাইরাস নাশকও বটে। করলা আমাদের শরীরের হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে যে আমাদের শরীরে রক্ত উপাদান বাড়ায়। এটি আমাদের মাথা ব্যথা ও উপশম করে আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় এবং রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। আল্লাহর বড় গুণ হলো এটা আমাদের বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখে তাই করলা খেয়ে ধরে রাখুন আপনার তারুণ্য।

খাবারের রুচি আনে

আমাদের অনেকেই আছে যা খাবারের অরুচি দেখা দেয় অপুষ্টি জনিত সমস্যায় ভোগেন। এজন্য আপনারা করলার রস সকাল ও বিকালে খেলে আপনার খাবারের রুচি অনেকটা বেড়ে যাবে। আমাদের শরীরের বাতব্যাতা নিরাময় করোলা পাতার রস একটু গরম করে খেলে বাত ব্যথা অনেকটা নিরাময় পাওয়া যায়।

করলার অপকারিতা

আমরা সবাই করলার উপকারের কথা জানি বা শুনেছি কিন্তু এর কিছু অপকারিতাও আছে আসুন জেনে নেয়া যাক।

* যেসব মহিলারা গর্ভবতী তাদের স্বাস্থ্যের জন্য অধিক পরিমাণে তিতা করলা খেলে মাসিকের প্রধান বৃদ্ধি পেতে পারে এবং গর্ভনিরুদ্ধক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। এতে আপনার গর্ভপাতের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাবে। তাই যেসব মহিলারা গর্ভবতী আছেন তারা তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করলা খাবেন।

* আমরা সবাই জানি করলা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারী একটি সবজি এটি রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তবে অতিরিক্ত খেলে আপনার হিতে বিপরীত হতে পারে। আপনি যদি অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন তাহলে রক্তের সার্কার মাত্রা কমিয়ে যেতে পারে এতে আপনার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই আপনি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কররা খেতে পারেন।

* ছোট বাচ্চাদের অতিরিক্ত এই করলা খেলে তাদের পেটের ব্যথা , বমি , পেট ফাঁপা রোগে আক্রান্ত হতে পারে । এমনকি বাচ্চাদের ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে । তাই ছোট বাচ্চাদের অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো বরং এ থেকে বাচ্চাদের এড়িয়ে চলুন।

* আসলে করলার তেমন কোন অপকারিতা নেই বললেই চলে । উপকারের পরিমাণই বেশী । তাই আমাদের পছন্দের তালিকায় একটি খাবার হচ্ছে করলা ।

লেখকের মন্তব্য

আশা করছি আজকের এই করলার উপকারিতা অ অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি যা আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে । যদি এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোন মতামত থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন । পরবর্তীতে আমরা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সাহায্য করবো । যদি আপনাদের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই একটা লাইক দিবেন এবং অন্যরা যাতে জানতে পারে সে জন্য অবশ্যই আপনার বন্ধদের মাঝে শেয়ার করবেন । যাতে নতুন নতুন আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের উপহার দিতে পারি ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url