Post Page After Menubar Ad

রমজান মাসের ফজিলত ও আমল দান- সাদকাহ সম্পর্কে



শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। নাজাত ও মাগফেরাত নিয়ে এসেছে এই রমজান মাস। আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে অধিক সওয়াব পাবার মাস এই রমজান। মাহে রমজান মাসের ফজিলত অনেক এ বিষয়ে পবিত্র কোরআন শরীফ হাদীসে উল্লেখ করা আছে। আল্লাহতালা বলেন রোজা তোমাদের উপর ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। সেহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন রোজাদারদের জন্য । ( আল হাদিস)


আল্লাহ তাআলা বলেন যারা রোজাদার ব্যক্তি তাদের জন্য পুরস্কার আমি নিজ হাতে প্রদান করিব। মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন যে ব্যক্তি পবিত্র এই রমজান মাস পায় সে যেন অবশ্যই রোজা রাখে। পবিত্র রমজান মাসে বেহেশতের দরজা গুলো খুলে দেওয়া হয় এবং দোজখের দরজা গুলো বন্ধ রাখা হয়।

ভূমিকা

সিয়াম সাধনার মাস রমজান । রমজান মাসে ফজিলত অনেক  । এ মাসে একটি সওয়াব করলে ৭০ টি নেকি পাওয়া যায় । এই রমজান মাসে একটি বরকতময় একটি রজনী আছে সেই রজনী হল লাইলাতুল কদর । এই লাইলাতুল কদর এর রাতে পবিত্র কোরআন শরিফ নাজিল হয়েছে । রমজান মাসে আল্লাহ তায়ালা বেহেস্তের সব দরজা খুলে দেন এর দোজখের সব দরজা বন্ধ করে দেন ।

রোজাদার ব্যক্তিকে আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতে পুরস্কার দিবেন । রমজান মাসে বেশী বেশী দান সাদকাহ করবেন কারন এই মাসে যত বেশী দান করবেন ততো বেশী সওয়াব পাবেন । রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করাবেন এতে আপনার সওয়াব কমবে না বরং সওয়াব বেশী পাবেন ।

রমজান মাসের ফজিলত ও গুরুত্ব

ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভ আছে। সেই পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় হিজরীতে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার উপর রোজা ফরজ করেছেন। যদি কেউ রমজান মাসে রোজা অস্বীকার করে অবশ্যই সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। আল্লাহতালা রোজা সম্পর্কে বলেন তোমাদের মধ্যে এই রমজান মাস যে পাবে অবশ্যই সে যেন রোজা রাখে। আর যদি কেউ অসুস্থ থাকে তবে অন্য যেকোনো সময় সমান সংখ্যক রোজা রেখে তা পূর্ণ করবে।

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন মুসলমানদের জন্য পবিত্র রমজান মাসের ফজিলতের  চেয়ে আর কোন মাস আসেনি। রমজান মাস হল ইবাদতের মাস এই মাস মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অপরিহার্য মাস । পবিত্র মাহে রমজান মাস যখন আগমন ঘটে তখন জিন ও শয়তানদের বেধে রাখা হয়। জাহান্নামের যতগুলো দরজা আছে সব বন্ধ করে দেওয়া হয় তার কোন দরজায় খোলা হয় না। 

এবং জান্নাতের যতগুলো দরজা আছে সব খুলে দেওয়া হয় তার একটি দরজা বন্ধ করা হয় না। রাইয়ান নামক একটা দরজা আছে জান্নাতে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা রোজাদারদের এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করাবেন। এই দরজা দিয়ে রোজাদার ব্যতীত অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না । তখন ঘোষণা আসবে রোজাদারগণ কোথায় তারা কখন উঠবে তারা ছাড়া কেউ এই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।  তারা যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে তখন এই রাইয়ান দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে ।

রমজান ও রোজার মর্যাদা

মহান আল্লাহপাক এই মাসকে বিশেষ সম্মানে ভূষিত করেছেন। এই রমজান মাস গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো রোজা। রোজার প্রতিদান আল্লাহর নিজ হাতেই দিবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন যে রোজা রাখে আমি তাকে ভালোবাসি। রমজান মাস মুমিনদের পাপ মার্জনার মাস। আল্লাহ তাআলা বলেন রোজাদারদের আমি ক্ষমা করে দিব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি সওয়াবের আশায় ঈমান সহ পবিত্র  রমজান মাসে রোজা রাখবে অতীতের তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।

রমজান মাস মমিন মানাদের জন্য খুব আনন্দের একটি মাস মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন রোজাদারদের জন্য আছে দুটি খুশির সংবাদ একটি খুশি হল যখন সে ইফতার করে আরেকটি খুশি হল তখন সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে মিলিত হবে। যে মমিনদার ব্যক্তি রোজা রেখে তার পানির তৃষ্ণা লাগে অথচ আল্লাহর ভয়ে পানি পান করে না। আল্লাহতালা কঠিন কেয়ামতের দিনে সেই রোজাদার ব্যক্তিকে নিজ হাতে পানি পান করাবেন এবং রোজাদার ব্যক্তি নেক আমলে পরিপূর্ণ করে দিবেন।

রমজানে জুম্মার ফজিলত

দেখতে দেখতে রমজান মাসের ছয়টি রোজা পার হয়ে গেল। রমজান মাসে জুম্মার দিন অনেক অপরিসীম একটি দিন । রমজান মাসের জুম্মার দিন একটি মহিমান্বিত দিন। এই দিনে অন্যান্য দিনের থেকে মসজিদে অনেক মুসল্লী জমায়েত হয়। জুম্মার নামাজ শেষে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দেশ ও জাতির জন্য অনেক দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। প্রতি রমজান মাসে আল্লাহ পাক অনেক মানুষকে ক্ষমা করে থাকেন ।

অনেক জাহান্নামী ব্যক্তিকে ক্ষমা করে তাদের জান্নাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন । তাই এই পবিত্র মাহে রমজান মাসকে রহমত বরকত ও মাগফিরাতের মাস বলা হয়। এই মাসে ফজিলত অনেক বেশি রমজান মাসে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তারাবি তাহাজ্জুদ সুন্নত নফল নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি থাকে। রমজান মাসে মুসলমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন জুম্মার দিন। জুম্মার দিন অনেক বরকতময় ও তাৎপর্যপূর্ণ আল্লাহপাক এই দিনকে অন্যান্য দিনে থেকে অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন। 

তাই রমজান মাসের জুম্মার দিনের ফজিলত অনেক বেশি থাকে। হাদিসে বর্ণিত আছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন যে ব্যক্তি জুম্মার দিন গোসল করে নামাজের জন্য মসজিদে গমন করিবে সে যেন একটি উট কোরবানি করলো। ইমাম যখন খুতবা প্রদান করিবেন তখন ফেরেশতারা তা সোনার জন্য মসজিদে হাজির হয়ে থাকেন। জুম্মার দিন থেকে আল্লাহ তায়ালা বরকতময় করে রেখেছেন এটি সপ্তাহের সেরা একটি দিন।

রমজানে যত আমল

রমজান মাস হিজরি সনের ষষ্ঠ মাস । এ মাস মুসলমানদের জন্য ফজিলতপূর্ণ একটি মাস । আল্লাহ তায়ালা এ মাসে প্রত্যেক নেক আমলের জন্য আত বেশী সওয়াব দেন যা অন্য কোন মাসে তা দেন না । রোজা প্রত্যেক মুমিন বান্দার জন্য আল্লাহ তায়ালা ফরজ করেছেন । আল্লাহ তায়ালা এই মাসে পবিত্র কোরআন শরিফ নাজিল করেছেন । এ মাসে একটা বরকতময় রজনী আছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম । সেই উত্তম রাতটি হল লাইলাতুল কদর । 

আল্লাহ তায়ালা লাইলাতুল কদর এর রাতে পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন । আমরা রমজান মাসে তারাবি নামাজ পরি এই তারাবি নামাজ পরা সুন্নত । অন্যকে ইফতার করানো রমজান মাসে একটি আমল । রজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করালে অনেক সওয়াব পাওয়া যায় । যদি কোন রজাদার ব্যক্তি অন্য কোন রজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করায় তবে তার গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে । রমজান মাসে বেশী বেশী ইস্তেকফার , তাওবা পড়া সওয়াব এর কাজ । রাসুল (সাঃ) এই আমলতি বেশী বেশী করতেন ।

রমজান মাসে দান সাদকাহ করা

রমজান মাস সওয়াব এর মাস এ মাসে বেশী বেশী দান সাদকাহ করতে হয় । এ মাসে একটি সওয়াব করলে ৭০ গুন বেশী সওয়াব পাওয়া যায় । রমজান মাসে যত বেশী দান করবেন ততো সওয়াব পাবেন । পবিত্র কোরআন শরিফে ২৭৪ নম্বর আয়াত সূরা বাকারা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যাহারা তাদের ধন - সম্পদ গোপনে , দিনে , রাতে বা প্রকাস্য অন্য লকের জন্য ব্যয় করে তাদের জন্য প্রতিদান আমার কাছে আছে ।

রাসুল (সাঃ) তার উম্মতদের রমজান মাসে বেশী বেশী দান সাদকাহ করতে উৎসাহী করতেন । রমজানে দান সদকার এত ফজিলত আল্লাহ তায়ালা দিয়েছেন , যা অন্য কোন মাসে এত ফজিলত দেন নাই । রাসুল (সাঃ) বলেছেন গোপনে যারা দান করবেন , আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিনে আরশের ছায়া তলে তাদের স্থান দিবেন । আপনে যত দান সদকাহ করবেন আপনার রিজিকে ততো বরকত হবে ।

লেখকের মন্তব্য 

পবিত্র রমজান মাস এক বছর পর আসে । এই রমজান মাসে ফজিলত অনেক বেশী । আমরা এই মাসে বেশী বেশী দান সদকাহ করবো , বেশী নেক আমল করবো, রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতার করাবো এতে আমাদের বেশী সওয়াব পাবো । রমজান মাস সম্পর্কে কিছু আলোচনা করেছি , যদি এই আলাপ আলোচনা আপনাদের কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে একটা লাইক দিবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url