Post Page After Menubar Ad

আনারসের পুষ্টিগুণ ও এর উপকারিতা - অপকারিতা সম্পর্কে জানুন



আনারসে আসে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ , পটাসিয়াম , ফসফরাস , ও ক্যালসিয়াম ।যা আমাদের  দেহের পুষ্টির অভাব পুরন করে আনারস । দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে । আনারসে আছে ফাইবার ও ফ্যাট আছে অনেক কম পরিমানে । আমাদের দেশের মত আনেক দেশে আনারসের চাষ হয় । এর বাহিরের অংশ কাটা যুক্ত ও ভেতর অংশ খেতে বেশ রসালো ।
 




আনারসে আছে ক্যালরি যাহা আমাদের শরীরের অনেক শক্তি জগাই । এতে আসে ক্যালসিয়াম যা আমাদের দাঁতের জন্য উপকারি । আনারস হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিন সি থাকায় যে কোন অসুকের ভাল কাজ করে ।

ভূমিকা

আনারস একটি মৌসুমি ফল । কিভাবে আনারস চাষ করতে হয় আনারসের চারা সংগ্রহ করতে হয় চারা সুন্দর পর চারার গোড়া পচন রোধ করার জন্য কি কি কীটনাশক ব্যবহার করা হয় এবং ভালো করে কিভাবে জমি সার্চ দিতে হয় এবং কি কি জৈব সার দিতে হয় কত সেন্টিমিটার পর পর চারা লাগাতে হয় । একটি পুষ্টিগুণে ভরা সুস্বাদু ফল এটা জ্বর ও জন্ডিসের জন্য বেশ উপকারী সাইনোসাইটিস জাতীয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে লড়াই করে । 

প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা আমাদের জিব্বা ও মুখের ঘা  বিরুদ্ধে কাজ করে অসুখের বিরুদ্ধে কাজ করে। আনারসের কিছু উপকারিতা আছে এটা খেলে আপনার শরীরের ব্যথা জ্বরের ব্যথা অনেকাংশে কমে যায় যাদের চোখের দুর্বলতা আছে সুখ দিয়ে পানি পড়ে সে সমস্যাগুলো সমাধান হতে পারে। আবার আনারসের অনেক অপকারিতাও আছে। এটা বেশি খেলে আপনার এলার্জি হতে পারে । 

শরীর ফুসকা পড়তে পারে বদহজম হতে পারে পেটে গ্যাস হতে পারে। গর্ভবতী মহিলাদের আনারস অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো গর্ভবতী মহিলাদের বেশি আনারস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ তাইএটা গর্ভবতী মায়েদের এড়িয়ে চলা উচিত।

আনারস চাষ হয় কি ভাবে

আনারস একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল । এর বৈজ্ঞানিক নাম হল (Anarus comosus ). । আনারস আমাদের দেশে একটি অর্থকরী ফসল । বিভিন্ন জাতের চারা থেকে বিভিন্ন জাতের আনারস পাওয়া যায় । তবে বাণিজ্যিক ভাবে আনারস চাষ করতে হলে ভাল জাতের চারা লাগাতে হবে । জমি থেকে চারা সংগ্রহ করতে চাইলে আনারস কাঁটার পর বৃত্ত থেকে যে তেউড় গুলো বের হবে সেগুল সংগ্রহ করে শোধন করে নিতে হবে ।

এতে গোঁড়ার পচন থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে ছত্রাক নাশক কারবেন্ডাজিম  দিয়ে ভিজিয়ে রেখে তার উপর আউর দিয়ে ঢেকে দিন । ২ সাপ্তাহ পার হলে সে গুলো শিকড় গজাবে তা পর জমিতে রোপণ করতে হবে । জমিতে ভাল মানের জৈব সার বিঘা প্রতি ২ টন দিতে হবে । এর পর জমিতে ভাল করে চাষ ও মই দিয়ে সারি সারি বেড করে চারা রোপণ করতে হবে  সারির দূরত্ব সাধারনত ২৫ থেকে ৩০ সেমি এবং চারার দূরত্ব ২৫ সেমি রাখতে হবে ।

বেডের দূরত্ব কমপক্ষে ৮০ থেকে ৯০ সেমি দূরত্ব রাখতে হবে । চারা রোপণের পর সার প্রয়োগ  করতে হবে । প্রতি বিঘা জমিতে ফসফরাস ৩০ কেজি , পটাশ ১০০ কেজি , নাইট্রোজেন ১০০ কেজি হারে দিতে হবে । আনারসের জমিতে পানি বেশী লাগেনা , তাই হাল্কা পরিমানে পানি দিতে হয় । সাধারনত ২৫ থেকে ৩০ দিন পর পর পানি দিলেই ভাল এবং ফল সময় ১০/১২ দিন পর সেচ দিলে ভাল হয় ।

জমিতে আগাছা হলে তা পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং ভাল আগাছানাশক স্প্রে করতে হবে যাতে আগাছার গুটি নষ্ট হয় । চারা রোপণ করার ১৪/১৫ মাস পর আনারস গাছে ফুল আছে এপ্রিল মাসের দিকে আনারস পাকতে  শুরু করে । তারপর পাকা ফল কেটে বাজার জাত করতে হয় ।

আনারসের পুষ্টিগুণ

আনারস একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর জাতীয় ফল , আনারস পুষ্টি গুনে ভরপুর একটি সুসাধু ফল । এর প্রতি গ্রামে আছে ৫০ থেকে ৫৫ কিলোক্যালরি শক্তি । এই আনারসে আছে ভিটামিন এ, বি, সি, পুষ্টি উপাদান । প্রতি ২০০ গ্রাম আনারসে আছে ১৩ ভাগ প্রোটিন, ১০ গ্রাম খনিজ পদার্থ ২৫ গ্রাম শর্করা , ২৩ গ্রাম ভিটামিন বি১, ৫০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি , সহজপাচ্য ফ্যাট , ৫ গ্রাম ফসফরাস ৩৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও আঁশ , লৌহ আছে যথা ক্রমে ৪ গ্রাম ও ৩ গ্রাম ।

জন্ডিস ও জ্বর এর জন্য বেশ উপকারি আনারস । সাইনসাইটিস জাতীয় অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করে আনারসে গলা ব্যাথাও ভহাল হয় । যাদের দীর্ঘ দিনের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তারা আনারস খেলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেটে পারেন । যাদের মুখে রুচি নেই এটা খেলে রুচি আসবে । এটাতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যাহা আমাদের জিব্বা , দাঁত , ত্বক , ও মাড়ির অসুখের বিরুদ্ধে কাজ করে ।

যাদের শরীরে কৃমি আছে তারা সকালে খালি পেটে আনারস খেতে পারেন এতে উপকার পাবেন । এতে ক্যালসিয়াম থাকাই আমাদের হাড়কে মজবুত করে । বিশ্বে অনেক দেশে আনারস প্রক্রিয়াজাত করা হয় যা সাধারনত কোন কোন সময় এই ফল থেকে অ্যালকোহল ও ভিনেগার জাতীয় উপাদান তৈরি করা হয় । আনারস কেটে আমরা খাই , কেটে যে অংশ ফেলে দিই সেই ফেলা অংশ আমরা পশু খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করতে পারি ।

আনারস খেলে আমাদের দেহের ওজন কমে , এতে আছে ফাইবার ও অনেক কম পরিমানে ফ্যাট । তাই শরীরের ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই আনারস খেতে পারেন । এটা পুষ্টির একটা বড় উৎস , আনারস আমাদের হাড় মজবুত করে , দাঁত , মাড়ির ও চোখের সুরক্ষা দেয় । তাই আপনেরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আনারস রাখতে পারেন ।

জ্বরে আনারসের উপকারিতা 

এটাতে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় ঠাণ্ডা কাশি ও ভাইরাস জনিত রোগের বিরুদ্ধে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে । ঋতু পরিবর্তনের ফলে মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়। এটা সাধারণত ভাইরাসজনিত জ্বর। এসব ভাইরাসের জন্য তো জ্বরে আনারস খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়। তবে জ্বর ৭ দিনে বেশি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ঋতু পরিবর্তনের ফলে মানুষের ঘরে ঘরে ভাইরাসজনিত জ্বর সর্দি কাশি লেগেই থাকে । 

শরীরের পুষ্টি চাহিদা ঠিক রাখার জন্য আনারস ভালো একটা খাবার হিসাবে বেছে  নেওয়া যেতে পারে। জন্ডিস ও জ্বরের জন্য আনারস বেশ ভালো উপকারী একটা ফল এতে ক্যালরি আছে যা আমাদের শরীরের শক্তি যোগায়। আনারস ব্যথা দূরকারী একটা ফল এবং কৃমি নাশক। অনেক সময় জ্বর হলে শরীরের ব্যথা খাওয়ার অরুচি ,  দুর্বলতা চোখ দিয়ে পানি পড়া কাশি অস্থিরতা ইত্যাদি হতে পারে।

এক্ষেত্রে আনারষ একটা ভালো ফল হিসেবে আপনারা খেতে পারেন আবার আনারসের জুস করেও খেতে পারেন। জ্বর হলে সাধারণত আমরা তরল খাবার বেশি খাই যা হজমকে হজম প্রক্রিয়া ভালো করে। এটাতে বছর পরিমাণে পানি থাকে যা আমাদের শরীরের পানি শূন্যতা রোধ করে।

আনারস বেশি হয় কোন অঞ্চলে

আনারাস  সাধারণত পাহাড়ি অঞ্চলের চাষবাসের জন্য উপযোগী এটা সাধারণত খাগড়াছড়ি বান্দরবান পাহাড়ি অঞ্চলে চাষাবাদ বেশি হয় এছাড়া সিলেট মৌলভীবাজার কুমিল্লা নরসিংদীতেও আনারসের ভালো হয় ভালো চাষবাস হয়। বিশেষ করে টাংগাইল জেলার মধুপুর ঘাটাইল উপজেলায় সারা বছরই আনারস চাষ হয়। প্রতিবছর মোদীপ মধুপুর অঞ্চলে প্রায় ৭৫০০ হেক্টর   জমিতে আনারস চাষ হয়। 

যা রাজশাহী সিলেট বরিশাল বগুড়া ঢাকা এসব অঞ্চলে সরবরাহ হয় এবং এসব অঞ্চলের উৎপাদিত আনারস আর সারা বছর ধরেই পাওয়া যায় আনারস আবার অনেক চাষীরা আনারসের সাথে অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করে আনারসের জমিতে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে টাঙ্গাইল মধুপুরের আনারস সবচেয়ে ভালো এবং সবচেয়ে বেশি পরিমাণে চাষাবাদ হয়। আমরা সাধারণত জানি টাঙ্গাইলের মধুপুর এই শুধু আনারসের বেশি হয়। 

কিন্তু না ভুল জানেন আনারসের রাজধানী বলে খেত রাঙ্গামাটির নানি আর চর যেখানে শুধু আনারস আর আনারসের বাগান আনারসের বাগান গুলো শাড়ি বদ্ধ ভাবে আছে দিন দিন বাড়ছে বাণিজ্যিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখানকার স্থানীয় বাজারে সারা বছরই এই ফলটি পাওয়া যায়। আনারস চাষবাসের জন্য পাহাড়ি অঞ্চলে সবচেয়ে উপযোগী স্থান তবে সবচেয়ে বেশি আড়াস হয় নানিয়াসার উপজেলায় রাঙ্গামাটি জেলায় এখানকার চাষীরা আনারস চাষের উপর সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল আনারস পুষ্টি মানের দিকেও অপরিসীম।

খালি পেটে আনারস খাওয়ার উপকারিতা

কিছু কিছু ফল খালি পেটে খাওয়ার উপকারিতা আছে তার মধ্যে আনারস অন্যতম। এটা দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে রক্তচাপ ঠিক রাখে এবং ওজন কমাতেও এর জুড়ি মেলা ভার । সকালে যদি আমরা খালি পেটে আনারস খাই আমার শরীরের অনেক উপকার হয় এটাতে আছে এন্টি অক্সিজেন ভিটামিন সি ও এনজাইম ব্রো মিলেইন উপাদান এই দুটোই আমাদের রোগ নিরাময়ে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে । 

তবে অন্যান্য রোগ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আনারস খাওয়া উচিত। নিয়মিত আনারস খেলে আমাদের লিভার অন্ত্রের অনেক উপকার আসে আনারসের মধ্যে রয়েছে পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরকে শক্তিশালী করে এটি ইলেক্ট্রো ভাইরালের ভারসাম্য হিসেবে কাজ করে। আনারস খেলে আমাদের দাঁতের বাঁদিকে শক্ত করে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে প্রতিদিন আনারস খেলে চোখের বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। 

এই মৌসুমী আনারস ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় ঠান্ডা কাশি জ্বর জন্ডিস প্রতিরোধ বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। গলা ব্যথা নাক দিয়ে পানি পরা ব্রংকাইটিস এগুলোর ওষুধ হিসেবে আনারস অনেক কার্যকারী ভূমিকা পালন করে। আনারসে প্রচুর আঁশ থাকে যা আমাদের কোষ্ঠকাঠিষ্ঠ কোষ্ঠ কানেক্টর রোগ থেকে অনেকাংশে মুক্তি পেতে পারি। 

এতে ফ্যাট থাকে না বলে আনারসের জুস করেও পান করা যায়। এই পুষ্টিকর ফলে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে যা আমার হায় হার ক্ষয় রোধ করা কাজ করে থাকে এবং ম্যাঙ্গানিজ আমাদের হারকে অনেক মজবুত করে।

আনারসের অপকারিতা

আনারস একটি মৌসুমি ফল , এটা শুধু আমাদের উপকারই করে না বরং কিছু অপকারিতাও আছে । যেমন এটা খেলে আনেক সময় আমাদের শরীরের চুলকানি ও ফুশকারি দেখা দিতে পারে । এতে চিনির পরিমান বেশী থাকায় ডায়াবেটিস রুগীদের ক্ষতিকর হতে পারে । এটা একটি অ্যাসিটিক ফল , খালি পেটে খেলে আনেক সময় পেটে নানা ধরনের অসুক হতে পারে । যাদের অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের বেসি আনারস না খাওয়াই ভালো তবে আনারস কাঁটার সময় ধুয়ে খেলে সমস্যা একটু কম হয় ।


একজন মানুষকে অতিরিক্ত আনারস ও নষ্ট আনারস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে অতিরিক্ত আনারস খাওয়ার ফলে আপনার মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে । আনারস টক জাতীয় ফল এবং অ্যাসিটিক জাতীয় , বেশী খেলে পেট খারাপ , গ্যাস , বদহজম হতে পারে । গর্ভবতী মহিলাদের এটা এড়িয়ে ছলা উচিত , গর্ভাবস্থায় খেলে এটা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। 

কাঁচা আনারস  যদি আপনি জুস হিসাবে ব্যবহার করে খেতে চান তবে এটা অত্যন্ত স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ এবং বিষাক্ত এটা খেলে আপনার বমি বমি ভাব হতে পারে। আনারস আমাদের রক্ত পাতলা করতে ব্যবহৃত হয় যা আমাদের শরীরের রক্তকে জমাট বাঁধতে বাধা দেয় তাই বেশি আনারস খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই অতিরিক্ত আনারস কা আমাদের এড়িয়ে চলা উচিত।

লেখকের মন্তব্য

আনারস একটি পুষ্টিকর ফল । গুনাগুনের দিক দিয়ে অনেক ফলকে  হাড় মানায় এই মৌসুমি ফল । এতে অনেক ঔসুধী গুন থাকায় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় । নিয়মিত আমাদের এই ফলটি খাওয়া উচিত । সুস্বাস্থ্যর জন্য এই আমাদের এই ফলটি খাওয়া উচিত । লেখাটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই একটি লাইক দিবেন এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url