Post Page After Menubar Ad

তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন



আমরা সবাই তুলসী পাতা সম্পর্কে কমবেশি কিছু জানি, আবার অনেকেই কিছুই জানিনা । তুলসী পাতার অনেক উপকারিতা ও অপকারিতা আছে যা আমাদের অনেকেরই অজানা। তুলসী পাতা আমাদের সর্দি কাশি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তুলসী পাতা সম্পর্কে আমাদের সবার এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানা উচিত কারণ এটি একটি ঔষধি পাতা।
যদি আপনারা এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকে তাহলে তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। মানসিক চাপমুক্ত রাখতে সাহায্য করে তুলসী পাতা। আমাদেরকে তাই তুলসী পাতা সম্পর্কে জানতে হবে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

ভূমিকা

যুগ যুগ ধরে আমরা জেনে এসেছি তুলসী পাতার ঔষধি গুন। এই তুলসী পাতা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী একটি উপাদান। তুলসী পাতা একটি আয়ুর্বেদ ঔষধ ‌ আজকে এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে, শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এসব বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

তুলসী পাতার উপকারিতা

সাধারণত গ্রাম অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে তুলসী পাতা দেখতে পাওয়া যায়। এই পাতার অনেক উপকারী দিক আছে যেটা আপনারা অনেকেই শুনেছেন। ঔষধি গুন সম্পন্ন একটি উপাদান হল এই তুলসী পাতা। আমরা অনেকেই তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই ভালোভাবে জানিনা। 

ঔষধ হিসাবে আমরা তুলসী পাতা বা তুলসী পাতার রস খেয়ে থাকি। তুলসী পাতার হাজার হাজার বছর আগে থেকেই মানুষের বিভিন্ন রোগ সারাতে ব্যবহার হয়ে আসছে। এই পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান। এই সমস্ত উপাদান আপনার শরীরের কিছু মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে ‌

সর্দি-কাশি সারাতে

আমরা অনেকেই হঠাৎ ঠান্ডা লাগে বা সর্দি কাশি হলে ওষুধ হিসাবে তুলসী পাতা খেয়ে থাকি। সর্দি কাশি সারাতে তুলসী পাতা খুব দ্রুত কাজ করে থাকে। আপনাদের যদি কারো বুকে কফ জমে যায় তাহলে তাকে প্রতিদিন সকালবেলা তুলসীপাতা আদা ও চা পাতা ভালো করে পানিতে ফুটিয়ে লেবু ও মধু মিশিয়ে খেতে দিন। দেখবেন এতে আপনার পপ দ্রুত উপশম হবে।

গলা ব্যথা দূর করতে

যদি আপনার কখনো হঠাৎ করে গলা ব্যথা হয় তাহলে আপনি তুলসী পাতা হতে পারে কারণ এই সমস্যা দূর করতে তুলসী পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অনেক সময় শ্বাসকষ্ট কমাতেও তুলসী পাতা বেশ কার্যকরী। কয়েকটা তুলসী পাতা হালকা গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি গলায় নিয়ে গার্গল করলে আপনার গলার ব্যথা দ্রুত উপশম হবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে

বর্তমান সময়ে ডায়াবেটিস একটা মারাত্মক রোগ। আপনাদের মধ্যে কেউ যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন তাহলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ‌ যদি আপনারা নিয়মিত তুলসী পাতা খেতে পারে তাহলে এটা আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে

যদি আপনারা সুস্থ থাকতে চান তাহলে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তুলসী পাতা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। আপনারা যদি নিয়মিত তুলসী পাতা খেতে পারেন তাহলে আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ ফুসফুসের বিভিন্ন সমস্যা এমনকি অ্যাজমার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে

যদি আপনি শারীরিক দিক দিয়ে একটু মোটা হন তাহলে আপনার শরীরে ওজন কমাতে তুলসী পাতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আপনার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল গুলো দূর করতে সহায়তা করে তুলসী পাতা। আপনার শরীরে খারাপ বলিষ্ঠ দূর হলে আপনার ওজন এমনিতেই আস্তে আস্তে কমতে থাকবে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে

যারা উচ্চ রক্তচাপ সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা নিয়মিত তুলসী পাতা খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। কারণ তুলসী পাতার মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত পটাশিয়াম যা আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। তবে যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদেরকে তুলসী পাতা না খাওয়াই ভালো।

তুলসী পাতার অপকারিতা

আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করছি। তুলসী পাতার আমাদের শরীরের জন্য যে কতটা উপকারী তা আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জেনে এসেছি। তুলসী পাতার মাঝে আছে শরীরে জন্য বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। এ সকল উপাদান আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। চলুন এবার জেনে নেই তুলসী পাতার কিছু অপকারিতা কথা-

১. আপনারা যদি তুলসী পাতা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে তাহলে এটা আপনার শরীরে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে দিতে পারে। যার জন্য শরীরের স্বাভাবিক রক্ত জবার বাধার কাজে বাধাগ্রস্থ হতে পারে।

২. আপনাদের মধ্যে যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদেরকে তুলসী পাতা খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। তুলসী পাতার মধ্যে যে উপাদান আছে সেটা আমাদের শরীরে রক্তচাপ কারো কমিয়ে দেয়। তাই এটা যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে তাদের খাওয়া উচিত আর যাদের রক্তচাপ কিছুটা কম তাদেরকে এটা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. যদি বেশি পরিমাণে তুলসী পাতা খান তাহলে আপনার শরীরে এলার্জির সমস্যা হতে পারে ও বমি বমি ভাব এর সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৪. বেশি পরিমাণে তুলসী পাতা খেলে আপনার পেটের গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমাণ মতো তুলসী পাতা আপনাদেরকে খেতে হবে ‌ তাহলে আপনারা তুলসী পাতার অপকারিতা সম্পর্কে অবগত হলেন।

শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম

শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম আমাদের সকলের জানা দরকার। শীতকালে আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যায় বুঝে থাকি। বিশেষ করে শীতের সময়ে সর্দি-কাশি গলা ব্যথা সহ বিভিন্ন সমস্যার ছোট বড় সবারই হয়ে থাকে। এসব সমস্যার জন্য শিশুর মা-বাবারা অনেক সময় চিন্তায় পড়ে যান। সেজন্য প্রত্যেকটা শিশুর জন্য আলাদা হবে যত্ন নেওয়ার দরকার। সেই জন্য আপনারা তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন। শিশুর সর্দি কাশি গলা ব্যথা সহ বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সহায়তা করবে তুলসী পাতা।

শিশুদের কিভাবে তুলসী পাতা খাওয়াতে হবে এর কিছু নিয়ম জেনে নেই-

* আপনার বাচ্চাকে প্রত্যেকদিন নিয়ম করে মধু ও তুলসী পাতা খাওয়াবেন। তুলসী পাতার সাথে আপনি যদি মধু মিশে খাওয়াতে পারে তাহলে আপনার বাচ্চার গলা ব্যথা অনেকটা দূর করবে।

* হালকা গরম পানির সাথে একটু আদা কুচি করে নিন। এর মধ্যে সামান্য পরিমাণ দারুচিনির গুড়া ও তুলসী পাতা দিন। পানি ঠান্ডা হওয়ার পরে এই বিশেষ উপাদানটি আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন এতে আপনার শিশুর সর্দি কাশি ভালো হয়ে যাবে।

* তুলসী পাতা রস করে সেই রসের সাথে সামান্য পরিমাণ চিনি বা গুড় মিশিয়েও শিশুকে খাওয়াতে পারেন। নিয়ম করে যদি এভাবে খাওয়ার অভ্যাস করেন তাহলে আপনার শিশু সুস্থ থাকবে ‌ এর পাশাপাশি ঠান্ডা জনিত সর্দি কাশি গলা ব্যথা এই সমস্ত সমস্যা অনেকটা দূর হয়ে যাবে ‌ সেজন্য আপনার পরিবারে সকলেই নিয়মিত তুলসী পাতা খাবেন এবং আপনার শিশুকে খাওয়াবেন।

লেখকের মন্তব্য

প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, আজকে আমি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং শিশুদের তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছে। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলটি পড়ে বেশ উপকৃত হয়েছেন। যদি এই আর্টিকেল পড়ে উপকৃত হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন কারন এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করলে তারা সম্পর্কে জানতে পারবে।

আরো এরকম আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত আপনারা ভিজিট করবেন ‌ যদি আপনাদের এই আর্টিকেলটি পরে কোন মতামত জানানো থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে সেটা জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ সবাইকে। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url