পাকা আম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানুন
প্রিয় পাঠক, আমার ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। পাকা আম খাওয়ার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা সম্পর্কে আজ আলোচনা করব। আপনাদের সবার কাছে পরিচিত একটি ফল আম। এখন আমের মৌসুম চলছে। ছোট থেকে বড় সবাই এই আম খেতে বেশ পছন্দ করে। আমের বেশ কিছু পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা আছে। আম খেয়ে সারা দিনের ভিটামিন এর চাহিদার প্রায় ২৫% পূরণ করা সম্ভব।
আম আমরা সবাই খাই কিন্তু এর পুষ্টিগুণ ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানেন না। এই ফলটিতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম সহ খনিজ পদার্থের বেশ ভালো উৎসব। পাকা আমের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে আশা করি আপনারা মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়লে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন
ভূমিকা
আম সাধারণত গ্রীষ্মকালীন একটি সুস্বাদু ফল। আম কাঁচা অবস্থায় সবুজ রঙের হয়ে থাকে এবং এই ফলটি পাকলে হলুদ রঙের হয়ে থাকে। আম সারা বিশ্বে সকলের কাছে একটি পরিচিত ফল এবং সুস্বাদু। আজকের আর্টিকেলে আমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে, আমের উপকারিতা সম্পর্কে ,কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে, পাকা আমে কি কি ভিটামিন আছে এ সকল বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা থাকছে। আশা করি আপনারা মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়বেন এবং এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আম সম্পর্কে তথ্য
বাংলাদেশ ঋতুর বৈচিত্রের দেশ। আমাদের এই বাংলাদেশ ছয়টি ঋতুর দেশ। ছয়টি ঋতুর প্রতিটি মৌসুমে ভিন্ন ভিন্ন হাওয়া নিয়ে আসে যেন ভিন্ন রকমের বৈচিত্র। তেমনি করে একটি মৌসুমী আমাদের প্রিয় ফল আমের আগমন ঘটে। এই মাসকে সাধারণত আমরা মধু মাস বলে থাকি। কাকা আম খেতে অনেক সুস্বাদু ও মজাদার। সাধের দিক থেকে এটি সুস্বাদু ও তরতাজাই নয়, আমের আছে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা। আমাকে সাধারণত ফলের রাজা বলা হয়ে থাকে।
আমের কদর সাধারণত সারা বিশ্বেই সমান। আমের ইংরেজি নাম (Mango) । আম এর বৈজ্ঞানিক নাম ( Mangifira indica). আমাদের এই উপমহাদেশের সবচেয়ে সুস্বাদু ফল হল আম। আমাদের দেশে বিভিন্ন জাতের আম আছে যেমন গোপাল ভোগ, ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালি, মল্লিকা ,কালি ভোগ, কাঁচা মিঠা, বারোমাসি, কারা বাউ, মিস্ত্রি দানা ,তোতাপুরী ,সূর্যপুরী ,ত্রিফলা, গোপাল খাঁস ইত্যাদি নামে আম পাওয়া যায়। এই ফলের অনেক পুষ্টি গুনাগুন আছে। পুষ্টিগুনে ভরপুর এই ফলটি স্কার্ভি বা ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিরোধে সহায়তা করে। চলুন তাহলে এবার জেনে নেই আমের পুষ্টিগরি ও এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে।
পাকা আমের পুষ্টিগুণ
আমে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি উপাদান থাকে । প্রতি ১০০ গ্রাম আমে কি কি পুষ্টি উপদান আছে তা জেনে নেয়া যাক ।
* ক্যালোরি ৬৯ কিলো ক্যালরি
* কার্বোহাইড্রেট ১৭ গ্রাম
* প্রোটিন ০.৫ গ্রাম
* চর্বি ০.২৭ গ্রাম
* খাদ্য আশ ১.৮২ গ্রাম
* নায়াসিন ০.৫৮০ মিলিগ্রাম
* এসিড ০.১৫০ মিলিগ্রাম
* ম্যাগনেসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম
* জিংক ০.০৫ মিলিগ্রাম
* বিটা ক্যারোটিন ৪৪৭ মাইক্রগ্রাম
* সোডিয়াম ৩ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন কে ৪.৩ মাইক্রগ্রাম
* ভিটামিন সি ২৮.৮ মিলিগ্রাম
* ভিটামিন ই ১.১৪ মিলিগ্রাম
* ক্যালসিয়াম ১১ মিলিগ্রাম
* ম্যাঙ্গানিজ ০.০২৮ মিলিগ্রাম
* আলফা ক্যারোটিন ১৮ মাইক্রগ্রাম
পাকা আমের উপকারিতা
এখন চলছে আমের মৌসুম। গ্রীষ্মকালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফল আম। এই রসালো আম কেবল সুমিষ্টি নয় বরং এতে আছে অনেক উপকারিতা। পাকা আম খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকমের উপকারে আসে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে কাঁচা আমের তুলনা পাকা আমের গুণ আরো বেশি। আমাদের শরীরকে সুস্থ ও রোগ মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। আম খাওয়ার সময় ক্যালরির দিকে নজর দেওয়া খুব জরুরি কারণ থাকা আম অত্যন্ত মিষ্টি এবং অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া নাও যেতে পারে। এবার জেনে না যাক আম আমাদের কি কি উপকারে আসে।
কোলেস্টেরল কমাতে
অনেক গবেষণায় দেখায় আছে যে আম খেলে আমাদের শরীরের কোলেস্টরেল কমাতে সহায়তা করে আমি থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফাইবার ও পেকটিন যা আমাদের শরীরের পরিষ্ঠদের মাত্রা কমিয়ে হাটকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। তাই আপনাদের কনিস্টল নিয়ন্ত্রণ রাখতে নিও না তো পরিমাণ মতো আম খেতে পারেন।
চোখের জন্য উপকারী
একটা মাযহায় ধরনের আমের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ ভিটামিন এ থাকে যা আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সহায়তা করে এবং রাতকানা ও শুষ্ক চোখ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। তাই আপনারা যারা আপনার চোখে ভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য আম একটি উপকারী খাবার হিসাবে বিবেচিত হবে। যদি আপনারা নিয়মিত আম খান তাহলে আপনাদের চোখ ভালো রাখতে সহায়তা করবে।
রোগ প্রতিরোক্ষ ক্ষমতা বাড়াতে
২৫ টি বিভিন্ন ধরনের ক্যারোটিনয়েড সহ আমি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি রয়েছে। এসব উপাদান আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে এবং গ্রীষ্মে শরীরকে অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।
ওজন কমাতে
আমি প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন আছে একটা আম খেলেই কিন্তু শরীরের প্রতিদিনের অভিযানের চাহিদা পূরণ হওয়ার কথা। আবার এই ফলটিতে ফাইবার ও যোগাযোগ শক্তিও পুষ্টি। তাই একই সমস্যা নিয়ে যারা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তারা বার্গার, কোল্ড ড্রিঙ্কস, স্যান্ডউইজের মত বিকল্প খাবার হিসেবে আম বেছে নিতে পারেন।
হজমের জন্য ভালো
সুস্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল তবে এই সুস্বাস্থ্য মূলে আছে হজম শক্তি। আর এই আমে থাকা এনজাইমগুলো প্রোটিন উপাদানগুলোকে ভেঙে ফেলতে পারে। এর জন্য আমাদের শরীরের খাবার খুব দ্রুত হজম হয় এবং পাকস্থলী বিভিন্ন রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।
ত্বকের যত্ন
এই গ্রীষ্ম মৌসুমে যারা নিয়মিত আম খান তাদের ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। আম খেলে শরীরেরবিভিন্ন সমস্যা দূর করে ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে সহায়তা করে। আমে আছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি যা আপনার ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে ত্বরান্বিত করে, আপনার ত্বকের বয়সের ছাপ করার সমস্যাকে ধীরগতি করে দেয়। এছাড়াও আমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের ফলিকল কে অক্সিডেটিভ ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা করে, যা চুল পড়ার হার অনেকটা উনি আনতে সাহায্য করে।
শরীর সুস্থ রাখতে
একটি আম প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে যা আপনার শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে ও হাটকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও পাকা আমের থাকে ক্যালসিয়াম যা আপনার শরীরের হারতে মজবুত করতে সাহায্য করে। আপনারা যদি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে চান তাহলে এই সমসুময় নিয়মিত পাকা আম খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে
আম একটি উচ্চ আওয়াজে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী একটি ফল। আমি নিয়মিত খেলে হজম শক্তি ভালো হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যা প্রতিরোধের জন্য খুব কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। যেসব ব্যক্তি হজমের সমস্যা আছে রাজনীতি নিয়মিত আম খান তাহলে আপনার এই সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে।
অ্যাজমা প্রতিরোধে
যেসব ব্যক্তি নিয়মিত আম খেয়ে থাকে তাদের মধ্যে অ্যাজমা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। এটা একটা আমের স্বাস্থ্য উপকারিতা। টাকা আমে থাকা উচ্চ বিটা ক্যারোটিন অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
রক্তশূন্যতা নিয়ন্ত্রণ
আমি থাকে উচ্চমাত্রায় আয়রন যা আপনার শরীরে রক্তশূন্যতা দূর করে ও অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।
কাঁচা আমের উপকারিতা
* আমের মৌসুম শুরু হওয়ার প্রথম থেকেই কাঁচা আম পাওয়া যায়। এই সময় আপনারা যদি নিয়মিত কাঁচা আম খান তাহলে আপনাদের যাদের শরীরের ওজন বেশি আছে তারা এই কাঁচা আমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন শরীরের ওজন কমাতে।
* আপনার নিয়মিত কাঁচা আম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে আপনার শরীরের গ্যাস তার শরীরের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
* কাঁচা আমের সাধারণত পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা আপনার শরীরের হাটকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও আমি উপস্থিত থাকে ভিটামিন ও খনিজ লবণ যা আপনার রক্তের প্রবাহ হতে সহায়তা করে থাকে।
* কাঁচা আম আপনার শরীরের কোলেস্টরেল কমাতে সহায়তা করে ও এর পাশাপাশি আপনার শরীরে লিভারের কার্যক্ষমতা বাড়াতে কাঁচা আমের ভূমিকা অপরিসীম।
* কাঁচা আমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। নিয়মিত আপনারা কাঁচা আম খেলে আপনার শরীরের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
* কাঁচা আমের অধিক পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে আর এই ভিটামিন সি এর ঘাটতি পূরণের মাধ্যমে নারীর রক্ত পড়া রোধ করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও কাঁচা আমের উপকারিতা কথা বলে শেষ করা যাবে না। আপনার শরীরের লবণের ঘাটতি পূরণ করে থাকে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে ,রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, চুল উজ্জ্বল করতে সহায়তা করে, রক্তের সমস্যা দূর করে ইত্যাদি।
পাকা আমের অপকারিতা
পাকা আমের খাওয়ার অপকারিতা নেই বললেই চলে, পাকা আমে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। আমি যে আপনারা এটা অধিক পরিমাণে গ্রহণ করেন তাহলে আপনার রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। সব ব্যক্তি ডায়াবেটিস আক্রান্ত তাদেরকে অবশ্যই ব্যাপারে একটু সচেতন থাকা দরকার। অনেক ডাক্তার বলেন যে, যেহেতু আম একটি প্রাকৃতিক সমৃদ্ধ ফল তাই এটা নিয়ে ঘাবড়াবার তেমন কিছু নেই। তবে হিসাব ব্যাক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদেরকে সব সময় সচেতন হয়ে বা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আম খাওয়া উচিত।
পাকা আম কি কি ভিটামিন থাকে
আজকের আর্টিকেলে পাকা আমের খাওয়ার উপকারিতা এবং কাঁচা আমের উপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের একটা ভালো ধারণা দিতে পেরেছি। পাকা আমের ক্যারাটিন থাকার পাশাপাশি ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম ও উচ্চমানের শ্বেতসার আবার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। আপনারা অনেকেই জানেন যে ভিটামিন আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। আমের ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২, ভিটামিন সি, থায়ামিন থাকার জন্য আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী । এই সব ভিটামিন আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনারা এই আমের মৌসুমে প্রতিদিন আপনার খাবার তালিকায় অবশ্যই টাকা আম রাখবেন।
লেখকের মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আমরা আজকের আর্টিকেলের একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। আজকে এই আর্টিকেলে আপনাদেরকে আমের পুষ্টিগুণ, পাকা আম খাওয়ার উপকারিতা, কাঁচা আমের উপকারিতা, সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে আপনাদেরকে জানানোর চেষ্টা করেছি। আপনারা মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি করার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আজকের আর্টিকেলটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তাই আকামে যেসব ভিটামিন আছে এ বিষয়টি আপনার বন্ধুদের মাঝে জানানোর জন্য এই আর্টিকেলটি শেয়ার করতে ভুলবেন না। এছাড়াও আরো অন্যান্য বিষয়ে যদি আপনাদের জানা থাকে তবে আমাদের কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য সকলকে ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url